তানোরে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের কাঁমারগা ইউনিয়নের (ইউপি) ভবানীপুর দাখিল মাদরাসা সুপার মাওঃ মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা সুপারের বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির চিত্র তুলে ধরে চলতি বছরের ১২ মার্চ বৃহ¯প্রতিবার ডাকযোগে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সুপারের কারণে মাদরাসা নানা অনিয়ম-দূর্নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে আকুন্ঠ দূর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে তেমন কোনো অবদান রাখতে পারছে না। কিšত্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পিছনে এমপিওর লাখ লাখ টাকা অপচয় হচ্ছে। তাদের অভিমত এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো ভাবেই সরকারের দেয়া এমপিও সুবিধাভোগের অধিকার রাখে না এমন প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধ করা উচিৎ। এছাড়াও শিক্ষকদের যোগ্যতা-পাঠদান পদ্ধতি, নিয়োগ পক্রিয়া, শিক্ষক প্রতি ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ইত্যাদি সরেজমিন অনুসন্ধান পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবি বলেও তারা মনে করছেন। বাংলাদেশের সংবিধান মেনে চলতে গেলে যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে পাঠাদান শুরুর বাধ্যবাধকতা রয়েছে এর বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী বলেন, ভবানীপুর মাদরাসায় নিয়মিত জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় না, এমনকি বাঙ্গালী জাতীর জনক ও মহান স্বাধীনতার স্বপত্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ও মূত্যু (শাহাদাৎ) বার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানিয়ে কোনো ব্যানার-ফেস্টুন পর্যন্ত্য তারা দেয় না। তারা বলেন, মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ডোনেশানের নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকা বাণিজ্য হলেও মাদরাসার উন্নয়নে একটি টাকাও ব্যয় করা হয়নি,এমনকি প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদরাসার সম্পত্তি থেকে অয়, সরকারী অনুদান ইত্যাদির কোনো হিসেব নাই। গত বছরে মাদরাসার উন্নয়নে এমপির বিশেষ বরাদ্দ ৮০ হাজার টাকা দেয়া হলেও কোনো কাজ না করেই সেই টাকা আতœসাৎ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক অভিভাবক বলেন, মাদরাসার অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় তারা পাঠদানের পরিবর্তে রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পাঠদান প্রায় মূখ থুবড়ে পড়েছে। তারা এলাকার অভিভাবকদের বিভিন্ন কৌশলে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে নানা অপতৎপরতা করে জাতীয় সংসদ, উপজেলা ও ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কাজ করেছে বলেও জনশ্র“তি রয়েছে। এছাড়াও নৈতিক শিক্ষার নামে অভিনব কৌশলে জামায়াত-শিবির মতাদশীদের লেখা বিভিন্ন বই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো ও জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতি জনমত গড়ে তুলতে বিভিন্ন কৌশলে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা হয় বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার রয়েছে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান থেকে শুরু করে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয় এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে সাধারণের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
এব্যাপারে মাদরাসার সুপার মাওলানা মতিউর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার একটি কুচক্র মহল দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসার ক্ষতিসাধনের জন্য নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে, এরাই মাদরাসার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা প্রচার করছে। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা বাধ্যতামুলক। তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। #