জামিন না হলে ‘বড় ধরনের কর্মসূচির’ কথা ভাবছে বিএনপি
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স : আবারও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করেছেন তাঁর আইনজীবীরা। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারিরীক অবস্থা বিবেচনা করে মানবিক কারণে জামিন পাওয়ার আশা করছেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়, তাহলে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প পথ দেখছেন নেতারা। ফলে তাঁকে বাচাতে শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা।
একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। সেখানে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
সবাইকে মাঠের নাম আহবান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই সমস্যা আজ বিএনপির একার নয়। তাই আমাদের সকলকে উঠে দাঁড়াতে হবে, প্রতিবাদ করতে হবে, সোচ্চার হতে হবে, রাস্তায় নামতে হবে এবং সমস্ত অর্জনগুলোকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আজকে গণতন্ত্রের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেই আন্দোলন দেশনেত্রীর মুক্তির মধ্যে দিয়ে সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির মধ্যে দিয়ে আমরা গণতন্ত্রের মুক্তিকে ফিরিয়ে আনতে চাই। এটাই হবে আমাদের ভাষা আন্দোলনের শিক্ষা। আসুন সবাই শপথ নেই- এই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করে আমরা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করব এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করব, ইনশাল্লাহ।’ খালেদা জিয়ার জামিন নাহলে বড় ধরনের কর্মসূচির কথা জানালেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার একই সূত্রে গাঁথা। আমরা জামিনের জন্য আবেদন করেছি, আমি এখনো আশা করি- সুপ্রিম কোর্ট নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিবে। আর যদি না দেন আন্দোলন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই আমাদের কাছে। তখন আমাদের বাধ্য করা হবে একটা কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করতে।’ খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে গণতন্ত্র পূণরুদ্ধারের দাবি উঠছে। দেশকে বাঁচাতে হলে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে বেগম জিয়া মুক্ত করতে হবে।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আজকের বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের শাসন, মানবিকতা, দেশনেত্রীর মুক্তির সাথে চ্যালেঞ্জিং মোকাবেলা করছে। এই চ্যালেঞ্জের সাথে মোকাবেলা করতে হলে, বিজয়ী হতে হলে, আত্মত্যাগ করতে হবে। আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘অনেকেই বলছে- বেগম খালেদা জিয়াকে যেকোনও উপায়ে জেল থেকে বের করে আনতে হবে। যেকোনও উপায় আনার আমি দ্বিমত করি। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অর্জিত গৌরবকে ধুলিসাৎ করি সেটা আমাদের জন্য লজ্জিত, আমাদের লজ্জার। সে ক্ষেত্রে জ্বলে ওঠা ছাড়া, আন্দোলন করা ছাড়া, লড়াই করা ছাড়া, রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ আছে বলে আমার জানা নেই।’