দুর্নীতি-মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: রাষ্ট্রপতি
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দুর্নীতি জুয়া, মাদক, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’নীতি ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। এটা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিতও হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি এ সব কথা বলেন। বর্তমানে জনজীবনে স্বস্তি বিরাজ করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সার্থক উত্তরসূরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যাত্রা পথে আলোর দিশারী। অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র পেরিয়ে তার বলিষ্ঠ ও প্রত্যয়ী নেতৃত্বে জনকল্যাণমুখী আধুনিক বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বের উন্নয়ন-বিস্ময়। বর্তমান সরকারে উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক সকল সূচকে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের অগ্রযাত্রার পথরেখাও সুনির্দিষ্ট। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ ঘটাবে এবং ‘রূপকল্প-২০২১’-এর দুর্নিবার যাত্রা আমাদের পথের দিশারী। সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান তিনি। ভাষণের শুরুতে রাষ্ট্রপতি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২০ সালের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ প্রদান আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গৌরবের বিষয়। জাতীয় সংসদে ভাষণদানের এ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়ায় আমি পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি। এ উপলক্ষ্যে আমি আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে মাননীয় সংসদ-সদস্যবৃন্দ ও প্রিয় দেশবাসীকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি। ভাষণের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহিদকে, যাদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে একটি সার্বভৌম দেশ ও স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজ পতাকা। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়। বাংলাদেশের জনগণের বিপুল সমর্থনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে চতুর্থবারের মতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। গত মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ আজ এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। পরপর তিনটি অর্থবছরে ৭ শতাংশের বেশি হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পর গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৮.১৫ শতাংশে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৮.২ শতাংশ। দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থবছরে মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১,৯০৯ মার্কিন ডলারে; গত এক দশকে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে তিনগুণ। দারিদ্র্যের হারও দ্রুত কমে এসেছে।