দাকোপের পশুর নদীতে যাত্রী বোঝাই খেয়া ডুবির ঘটনায় ১জনের লাশ উদ্ধার।

দাকোপ প্রতিনিধি: পশুর নদীতে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই খেয়া ডুবির ঘটনায় একজনের লাশ উদ্ধার ও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৪ নভেম্বর রোববার সকাল সাড়ে ৭ টায় দাকোপের লাউডোব-বানিশান্তা খেয়া ঘাটের পূর্ব পাড়ের মোংলা ফ্যাক্টরী ঘাটের অদুরে খর¯্রােতা পশুর নদীতে। ভুক্তভোগীর পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানাগেছে, ২৪ নভেম্বর রোববার সকাল আনুঃ সাড়ে ৭ টায় দাকোপ উপজেলার লাউডোব-বানিশান্তা খেয়া ঘাটের মাঝি সাগর ও তুহিন ইঞ্জিন চালিত খেয়ার নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার ফ্যাক্টরী ঘাটে যাচ্ছিলো। এ সময় নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে খেয়ার নৌকাটি বালি উত্তোলনের ড্রেজারে ধাক্কা খেয়ে ঘটনাস্থলে ডুবে যায়। ওই সময় খেয়ায় থাকা যাত্রীরা জীবন বাঁচাতে পশুর নদী সাঁতরিয়ে তীরে উঠে। এ ঘটনায় আরো যাত্রী নিখোঁজ থাকতে পারে বলে এলাকাবাসীর ধারনা করছেন ।
খেয়া ডুবির ঘটনায় তাৎক্ষনিক ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলার ডুবোরী সদস্যরা পশুর নদীতে যাত্রী তল্লাসীর অভিযানে নামেন। নদী থেকে দাকোপ উপজেলার লাউডোব গ্রামের মৃতঃ প্রফুল্ল্য বিশ্বাসের ছেলে বসুন্ধারা এসি আই গ্রুপের সেল ম্যান সুন্দর বিশ্বাস(৫৪)এর প্যান্ট শার্ট পরিহিত লাশ উদ্ধার করে মোংলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। এ ঘটনায় অনেক যাত্রী আহত হন এবং তারা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন বলে জানাগেছে। খেয়া ডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া সুন্দর বিশ্বাসের লাশটি ময়না তদন্তের জন্য মোংলা থানা পুলিশ সকল প্রস্তুুতি গ্রহণ করেছেন। ইঞ্জিন চালিত খেয়া ডুবির ঘটনায় মৃত্যুবরণ কারী সুন্দর বিশ্বাসের পুত্র চিরঞ্জিত বিশ্বাস ও কঙ্কন বিশ্বাস অভিযোগ করে জানান, খেয়া ঘাটের ইজারাদার বানিশান্তা ইউপি চেয়ারম্যান সুদেব রায়। তার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত টোল আদায় করে ১৪ থেকে ১৫ বছরের এক কিশোরকে দিয়ে ইঞ্জিন চালিত খেয়া ট্রলারটি চালিয়ে আসছিলো।
এ সকল অনিয়মের প্রতিবাদ করেও কোন সমাধান হয়নি বলে শতাধিক পারাপার যাত্রীর অভিযোগ করেছেন। তারা আরো জানান, খেয়াঘাট সংলগ্ন পরিত্যক্ত ইউনিয়ন ভবনটি ইজারাদারের লোকজন অবৈধ তেল ব্যবসার জন্য ব্যবহার করে আসছে এবং যাত্রী ছাউনিটি বর্তমানে পারাপারে যাত্রীদের বসতে না দিয়ে অবৈধ গুদাম ঘর হিসাবে ব্যবহার ইউপি চেয়ারম্যানের সুদেব রায় চাউল রাখার ঘর হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। বিগত দিনের বিভিন্ন অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার কারণসহ খেয়া ডুবির ঘটনাকে কেন্দ্র বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী লাউডোব-বানিশান্তা খেয়া ঘাটের ঐ সকল স্থাপনা অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছেন।
এ ঘটনায় কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলার সদস্যরা খেয়া ঘাটের টোল আদায়কারী রবীন বিশ্বাস, রাজ্জাক জোমাদ্দার কে প্রাথমিক ভাবে আটক করে নিয়ে যায়। কিছুক্ষন পরে সাধারন মানুষ দেখতে পায় দুরে নদীর মাঝখানে কে যেন সাঁতার কেটে বাচার চেষ্টা করছে তাৎখনিক সাধারন জনতা একটি ট্রলার নিয়ে উদ্ধারের জন্য যায় এবং যেয়ে দেখে বিল্লাল হোসেন । তখন তাকে ট্রলারে তুলে নেয় তার কাছে জানতে চাইলে সে বলে পাশের গ্রামে সে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করলে সেখানকার জনগন তাকে ধাওয়া করে এক প্রর্যায়ে সে দৌরে পানিতে নেমে সাঁতার কাটে মোংলার পারে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে বিল্লাল হোসে কে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন মোংলার সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানাযায়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া খেয়াটি কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবোরীরা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুসসুর আলী খান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ, দাকোপ থানা অফিসার ইনর্চাজ শফিকুল ইসলাম চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *