ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হিন্দু কলেজ ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ! ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

নয়ন বাবু, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেক উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক হিন্দু কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাটি বর্তমানে এলকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিযোগ ঠেকাতে চৌকিদার পাহারায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ভুক্তভুগির পরিবারকে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানান ওই কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী। সে উপজেলার দিবর ইউনিয়নের বাকরইল গুচ্ছগ্রামের মৃত অনিল চন্দ্রের মেয়ে ও সাপাহার সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ভুক্তভুগির অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দীর্ঘ ৫বছর ধরে বিয়ের কথা বলে দৈহিক সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলো। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়লে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চেয়ারম্যান চাপ সৃষ্টি করেন। গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করতে না চাইলে ছোট মেয়ের বিয়ের পর তারা আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করবে বলে বাচ্চাটি নষ্ট করতে বাধ্য করেন। সম্প্রতি, তাকে বিয়ের করার কথা বললে ভুক্তভুগির কাছে ৪০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন চেয়ারম্যান সাদেক। অভিযোগ ঠেকাতে গত সোমবার থেকে চৌকিদার পাহারায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ভুক্তভুগির পরিবারকে। এতে সহযোগিতা করছেন দিবর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সরকার ও দিবর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হারুন-অর রশীদ। ভুক্তভুগি ছাত্রীর মা দৈব্য বালা অভিযোগ করেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ওই চেয়ারম্যানের সঙ্গে আঁতাত করে ঘটনাটি ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে ৪০ লাখ টাকার চাঁদা দাবি করছে। আমরা নিজেরায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের গুচ্ছগ্রমে বসবাস করছি। মানুষের বাড়িতে দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। বর্তমানে মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অভিযুক্ত নজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাদেক উদ্দিন সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন। দিবর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, মেয়েটি সঙ্গে নজিপুর ইউপির চেয়ারম্যান সাদেক এর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল সত্য। মেয়েটি কাছে টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। তাই মেয়েটি যেন কোথাও পালাতে না পারে সে জন্য আমি গ্রাম পুলিশদের দেখতে বলেছি। পতœীতলা থানার ওসি পরিমল কুমার চক্রবর্তী বলেন, গ্রাম পুলিশকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা উভয় পক্ষকে ডেকে একটি সমাধান করার জন্য ডেকেছি। ধর্ষণের মামলা রজু না করে উল্টো ভিকটিমের বিরুদ্ধে সালিশের সমাধান করার এখতিয়ার পুলিশ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসপি স্যারের নির্দেশেই ডাকা হয়েছে। নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য থানা পুলিশকে বলেছি। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা যাচাই পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, গত ৭/৮ মাস পূর্বে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এক নারী ইউপি সদস্যকে তার ইউপি কার্যালয়ে আপত্তিকর ঘটনার অভিযোগ উঠে। পরে লোক লজ্জ্বায় ওই নারী ইউপি সদস্য বাধ্য হয়ে স্বপরিবার গ্রাম ছেড়ে নজিপুর পৌর শহরে ভাড়া বাসায় অবস্থান করে আসছেন। এ ঘটনায় নজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদেক উদ্দীনের কঠোর শাস্তি চাচ্ছেন সুশিল সমাজের লোকজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *