তানোরে আসনারা ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনার দাবী

তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌর সদরে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে গড়ে ওঠা আসনারা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পৌরবাসী অবৈধ এই ক্লিনিকে ভাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার দাবী করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে অথচ রহস্যজনক কারণে জেলা সিভিল সার্জন বিষয়টি দেখেও না দেখার অভিনয়ে এড়িয়ে চলেছে। আবার উপজেলা প্রশাসন মাঝে মাঝে বিভিন্ন ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করলেও আসনারা ক্লিনিক এখানো অভিযানের বাইরে রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, সরকারি হাসপাতাল, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও একশ্রেণীর পল্লী চিকিৎসক রোগী ধরা দালাল হিসেবে কাজ করছে। রোগী প্রতি কমিশনের আশায় এসব দালালরা অভিনব কৌশল ও প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগী বাগিয়ে নিয়ে এই ক্লিনিকে ভর্তি করছে। ফলে সার্বক্ষনিক চিকিৎসক ছাড়াই এই ক্লিনিক চললেও তাদের রোগীর অভাব হচ্ছে না। চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা অধিকাংশক্ষেত্রে মালিক-কর্মচারীরা চিকিৎসক সেজে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। স্থানীয়রা ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সরকারিবিধি মোতাবেক প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগণষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল পরিচালনা করতে পরিবেশ ছাড়পত্র, স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস অনুমতিপত্র, পারমাণবিক শক্তি কমিশনের অনুমতিপত্র, আয়কর-ভ্যাট, ডিপ্লোমা নার্স ও প্যাথলজি ডিপ্লোমাধারী সার্বক্ষণিক এমবিবিএস চিকিৎসক অবশ্যই থাকতে হবে। এ ছাড়াও ১৯৮২ সালের ‘দ্য মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড লাবরেটরিজ রেগুলেশন’ অনুযায়ী ১০ শয্যাবিশিষ্ট কোন হাসপাতালের জন্য জরুরি বিভাগে তিনজন স্থায়ী চিকিৎসা কর্মকর্তা, তিনজন ডিপ্লোমাধারী জ্যেষ্ঠ সেবিকা, তিনজন কনিষ্ঠ সেবিকা, তিনজন আয়া, তিনজন ওয়ার্ডবয়, একজন ব্যবস্থাপক, দু’জন পাহাদার, মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ অস্ত্রপাচার কক্ষ (অপারেশন থিয়েটার) না থাকলে সেখানে কোনো রোগীর অস্ত্রপাচার (অপারেশন) করানো যাবে না বলে শর্ত দেয়া রয়েছে। কিšত্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারির যোগসাজশে এই ক্লিনিক মালিক নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও জনশ্র“তি রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনিক মালিক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল তার ব্যবসার সুনাম ক্ষুন্ন করতে এসব মিথ্যা প্রচারণা করছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা, কাজী মিজানুর রহমান বলেন, কোনো ক্লিনিকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, তবে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে সেহুতু আসনারা ক্লিনিকের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে কোনো অনিয়ম বা অসঙ্গতি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *