আবরারের লাশ-আন্দোলনকে ‘স্বার্থান্বেষীরা’ ভিন্নখাতে নিতে চায়: শিক্ষার্থীরা

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: আবরার লাশ ও আন্দোলনকে অনেক স্বার্থান্বেষী মহল ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে চায় বলে আন্দোলনের ইতি টেনেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা ‘সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে’ রুখে দিতে গণশপথে অংশ নেবেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টেবার) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহীদ মিনার চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বিশেষভাবে তৎপর ছিলেন বলেই এতো দ্রুত এতো অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ তারা বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে— আমাদের ভাইয়ের লাশকে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করে আড়ালে অন্তরালে অনেক স্বার্থান্বেষী সংগঠন নিজেদেরকে প্রমোট করা চেষ্টা করছেন। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই- এদের সাথে আমাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নাই। আমরা দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই— এই সব স্বার্থান্বেষী মহলের এজেন্টা দেখে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। রাজপথে আমাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত করে এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার সুযোগ আমরা দিতে চাই না।’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বুয়েট প্রশাসন চলমান অগ্রগতি ও দৃশমান স্বদিচ্ছা দেখিয়েছে আমরা সেই স্বদিচ্ছার প্রতি পূর্ণাঙ্গ আস্থা রেখে আমাদের আন্দোলন আগামীকাল থেকে আপাতত ইতিটানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বুয়েট প্রশাসন যেসব উদ্যােগ নিয়েছে তার প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীরা। ১০ দফা দাবির গুলোর মধ্যে যে দাবিগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি ছিল তার জন্য ধন্যবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থা এই ঘটনায় একটি সুষ্ঠু ও সঠিক বিচার করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে তারা বিশ্বাস রকেন। বুয়েট প্রশাসনের উদ্দেশ্যে যে দাবিগুলো ছিল তা বুয়েট প্রশাসন তৎপর জানিয়ে তাতেও সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা চুক্তির সমালোচনা করে ফেসুবকে স্ট্যাটাস দেন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ। ওই স্ট্যাটাসের জন্য গত ৬ অক্টোবর রাতে ফোন করে তাকে শেরেবাংলা আবাসিক হল কক্ষে ডেকে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে সেখানেই পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুই দফা পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হলে আবরারের লাশ সিঁড়ির নিচে রাখে। গত ৭ অক্টোবর ভোর ৪টার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় তীব্র আন্দোলনে নামেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ দফার দাবি নিয়ে তারা আন্দোলন অব্যাহতি রাখে। ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে গত শনিবার দুই দিনের জন্য আন্দোলন শিথিল করে শিক্ষার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *