অপেক্ষামান ফেরিঘাটে রোগীর মৃত্যু, তদন্ত প্রতিবেদনে সেই যুগ্ম সচিব-ডিসি ‘নির্দোষ’

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল না আসা পর্যন্ত কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাটে অপেক্ষামান থাকা স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেন জমা দিয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। এতে সেই যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলের। মাদারীপুর জেলার ডিসিরও কোনো দায় খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। হাইকোর্টে পেশ করার জন্য বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তবে অ্যাম্বলেন্সে রোগী থাকার পরও ফেরি ছাড়তে বিলম্ব করার জন্য ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেন ঘাটের প্রান্তিক সহকারী খোকন মিয়া ও উচ্চমান সহকারী ফিরোজ আলমকে দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা দেরীতে ফেরি ছাড়া হয়। এ কারণে তিতাসের মৃত্যুর দায় এ তিনজন এড়াতে পারেন না। যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের কোনো দোষ নেই। কেননা তিনি জানতেন না যে ফেরিঘাটে মুমূর্ষু রোগী আছে। একইভাবে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসকও বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য কোনোভাবেই ফেরি দেরী করে ছাড়া যাবে না বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদন গ্রহণকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, বাৎসরিক অবকাশের পর হাইকোর্ট খোলার পর তিনি এই প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করবেন। ৪৫ দিনের অবকাশ শেষে ১৩ অক্টোবর হাইকোর্টের কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভ হবে। উল্লেখ্য, মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ফেরিঘাটে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছিল সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষকে (১১) বহনকারী একটি অ্যাম্বুলেন্স। জানা যায়, সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুল সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা যাবেন বলে ওই ফেরিকে অপেক্ষা করতে জেলা প্রশাসক ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়। তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় স্কুলছাত্র তিতাস। গত ২৫ জুলাই রাতের এ ঘটনার চার দিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। গত ৩১ জুলাই অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এরপরই মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *