কোটচাঁদপুরে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনায় লাশ দাফন নিয়ে পুলিশকে এলাকাবাসীর মারধর
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে সাপের কামড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় লাশ দাফন নিয়ে পুলিশের সাথে এলাকাবাসীর ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে কিছু উশৃঙ্খল ব্যক্তি পুলিশের উপর চড়াও হয় এবং পুলিশকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করে। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সিঙ্গিয়া গ্রামে। কোটচাঁদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুল আলম বলেন, মোবাইলের ম্যাসেজের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন সিঙ্গিয়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে মিকাইল (২৮) কীটনাষক পানে মারা গেছেন অথচ গ্রামে তাকে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে লাশ দাফনের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুল আলম কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলামকে জানান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম তিনি নিজেই ঘটনাস্থলে যেয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ ঝিনাইদহের মর্গে পাঠানোর জন্য এস আই তপন চন্দ্র দাসকে নির্দেশ দিয়ে চলে আসেন। এ সময় এস আই তপন চন্দ্র দাস সিপাই জিনায়েত হোসেনকে সাথে নিয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য সুরাতহাল রিপোর্ট করতে গেলে গ্রামবাসী জানতে পারে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এ সময় গ্রামের পুরুষ মহিলারা লাশ ময়না তদন্তে না নেয়ার জন্য পুলিশকে বাঁধা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে গ্রামের কিছু উশৃঙ্খল যুবক দারোগাসহ ওই দুই পুলিশ সদস্যকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করে। এসআই তপন চন্দ্র দাস জানান, তাদেরকে ধাক্কা দেওয়াসহ মারধরও করা হয়েছে। গ্রামের কিছু লোকজন না ঠেকালে তারা চরম মারাত্মক ভাবে আহত হতেন বলে জানান। পরে খবর পেয়ে কোটচাঁদপুর থানা পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুল আলম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইমরান আলমসহ একদল ফোর্স ঘটনাস্থলে যেয়ে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা লাশের বিভিন্ন আলামত দেখে ও এলাকাবাসীর কাছে শুনে সাপে কামড়ানো বিষয়টি নিশ্চিত হন। সেই সাথে আইন অনুযায়ী সকল কার্যক্রম শেষ করে বিকাল ৫টার দিকে লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে পুলিশ কর্তারা ফিরে আসেন। ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসে জনৈক পুলিশের এসআই জানান, এ ঘটনায় পুলিশের মারধরসহ পুলিশকে বাঁধা দানে বেশ কয়েক জনের নামে মামলার প্রস্তুতি চলছে আজ রাতেই (শনিবার) মামলা নথিভূক্ত হতে পারে। এ ব্যাপারে বলুহর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন বলেন, মোবাইলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশ ও গ্রামবাসির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। যার কারণে সামান্য অনাকাঙ্খিত ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও পুলিশ প্রসাশন তথ্যটি মিথ্যা প্রমাণ পাওয়ায় লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছে। এখন আর ওই গ্রামে কোন উত্তেজনা নাই। ওই গ্রামের রিপন মন্ডল বলেন, মিকাইল ভোর ৬টার দিকে গরুর খাওয়ানোর জন্য কলার বোগ (কলার চারা) কাটতে মাঠে যায়। এ সময় তাকে সাপে কামড় দেয়। মিকাইল বাড়ীতে ফিরে আসার পর তার মুখ থেকে ফেনা উঠতে থাকলে তাকে প্রথমে কোটচাঁদপুর হাসপাতালে আনা হলে হাসপাতালের সাপের ওষুধ না থাকায় যশোহর হাসপাতালে রেফার্ড করে কর্তব্যরত ডাক্তার। কিন্তু মিকাইলের অবস্থা দ্রুত খারাপের দিকে যাওয়ায় তার স্বজনরা তাকে নিয়ে কয়েকটি কবিরাজের বাড়ী ধর্ণা দিয়েও মিকাইলকে তারা বাঁচাতে পারেনি। মিকাইল শনিবার সকাল ১০টার দিকে মারা যায়।