তানোরে কালের স্বাক্ষী শিমুল গাছে কুড়ালের কোপ !
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরের কলমা ইউপির নড়িয়াল দাখিল মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে মাদরাসা চত্ত্বরে অবস্থিত প্রায় শতবর্ষী কালের স্বাক্ষী তাজা শিমুল গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। বিশাল আকারের গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ এই কথিত অভিযোগ এনে গাছটি কাটা হচ্ছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহলে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। স্থানীয়রা এ ঘটনার সরেজমিন তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, গাছটি যদি ঝুঁকিপূর্ণই হয় তাহলে ঝড়ের মৌসুমে কাটা হলো না কেনো ওই সময়ে কাটা হলেও তো বিষয়টি বিবেচনা করা যেতো, ঝড়ের মৌসুমেই যদি গাছটি ভেঙ্গে না পড়ে তাহলে এখন ভেঙ্গে পড়ার কথা আসছে কোনো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, পবিত্র ঈদুল-আযহায় লম্বা ছুটির ফাঁদে গাছ কাটার উদ্দেশ্যে তা আতœসাৎ করা ব্যতিত অন্যকিছু নয়। তারা আরো বলেন,সুপার আওয়ামী লীগ মতাদর্শী পরিচয় দিলেও মাদরাসায় জাতীয় শোক দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলী জানিয়ে কোনো ফেস্টুন ঝোলানো হয়নি।
জানা গেছে, তানোরের কলমা ইউপির নড়িয়াল দাখিল মাদরাসা চত্ত্বরে কালের স্বাক্ষী প্রায় শতবর্ষী একটি বৃহত শিমুল গাছ রয়েছে। চলতি বছরের ১১ আগস্ট লম্বা ছুটির সুযোগে সুপার ওই গাছ কাটা শুরু করেছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলা বন ও পরিবেশ কমিটির অনুমোদন না নিয়ে সুপার ও সভাপতি পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে শতবর্ষী ওই শিমুল গাছ কাটছে। ঘটনাটিকে স্থানীয়রা গাছ খেকো সুপারের কান্ড বলে অভিহিত করেছেন। বিষয়টি বিধি সম্মত নয় বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা। মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জানান, প্রচন্ড গরমের সময় গাছটি আমাদের ছায়া দিয়ে গরমের হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা করতো। কিšত্ত গাছটি কাটায় মাদরাসার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নস্ট ও পরিবেশ চরম হুমকির মূখে পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, মাদরাসা চত্ত্বরের বিশাল এই গাছ এভাবে কাটা উচিৎ হয়নি এটা অনৈতিক। এব্যাপারে নড়িয়াল দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুর রহিম বলেন, গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কমিটির অনুমোদ নিয়ে কাটা হচ্ছে। এব্যাপারে মাদরাসার সভাপতি রুবেল হোসেন বলেন, গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা সকলের মতামতের ভিত্তিত্বে কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পরবর্তীতে প্রকাশ্যে নিলাম ডাকে বিক্রি করা হবে এবং সেই অর্থ মাদরাসার উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, উপজেলা বন ও পরিবেশ কমিটির অনুমোদন নিয়ে কেবলমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটা সম্ভব। এব্যাপারে রাজশাহী বনবিভাগের আঞ্চলিক কর্মকর্তা বলেন, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতিত তাজা গাছ কাটার কোনো সুযোগ নাই।