১৮ বছরের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেকর্ড ভেঙেছে ডেঙ্গু
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: বাংলাদেশে ২০০০ সালে প্রবেশ করে মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গু। প্রতি বছরই কম-বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে ডেঙ্গুতে। তবে ২০১৯ সালে এই রোগ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গত ১৮ বছরের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেডর্ক ভেঙেছে এবারের ডেঙ্গু। শুধু রবিবার (২৮ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত— এই ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৬ জন। এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৩ হাজার ৬৩৭ জনে। এটা সরকারি হিসেব, তবে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এর চেয়ে অনেক বেশি দাবি করেছে। শুরুতে রাজধানী কেন্দ্রিক হলেও চলতি মাসের শুরু থেকে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। প্রথমে রাজধানীর আশপাশের জেলা ও সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু ছড়ায়। রাজধানীর হাসপাতাল গুলোতে ব্যাপক সংখ্যায় ডেঙ্গু রোগী আসায় কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। অনেক হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগী ফিরিয়ে দিচ্ছে। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৯ জন বলা হলেও বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্নিষ্ট চিকিৎসকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব থেকে জানা যায়, ঢাকার ১৩টি সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৩৬টি বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৮৪৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০০০-২০১৮ সাল পর্যন্ত সারা দেশের ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫৫১, ২৪৩০, ৬২৩২, ৪৮৬, ৩৪৩৪, ১০৪৮, ২২০০, ৪৬৬, ১১৫৩, ৪৭৪, ৪০৯, ১৩৫৯, ৬৭১, ১৭৪৯, ৩৭৫, ৩১৬২, ৬০৬০, ২৭৬৯ ও ২০১৯ সালের (২৯ জুলাই পর্যন্ত) ১৩ হাজার ৬৩৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (সংক্রামক ব্যাধি) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা জানান, বিগত বছরগুলোতে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি পাওয়া গেছে। কারণ, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টি বেশি হয়। বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার প্রজনন ক্ষমতা চক্রাকার হারে বৃদ্ধি পায়। থেমে থেমে বৃষ্টি হলে নালা-নর্দমা, ড্রেনে পানি জমার সুযোগ পায়। ওই পানি এডিস মশার প্রজননে অত্যন্ত সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাই এই দুই মাস এডিসের প্রকোপ বেশি থাকে। কিন্তু এবার জুলাই মাসেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আগামীতে কী হয় জানি না।