মতলব উত্তরে ফিল্মে স্টাইলে প্রতারক ইমামের ভূয়া বিয়ে, স্কুল ছাত্রীর সর্বনাশ

বিশেষ প্রতিনিধি : মতলব উত্তরে ৩ ইমামের ফিল্মে স্টাইলে বিয়ের নাটকের ফাঁদে পরে স্কুল ছাত্রী ঝর্ণার সর্বনাশ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায় স্বামী মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান নবীর (৩০) (ভুয়া) কাজী দুলা ভাই তাজুল ইসলাম সেও ইমাম, মেয়ের উকিল বাবা ছেলের পরম আত্মীয় সালাউদ্দিন সেও মসজিদের ইমাম। আরো আছে ইমাম সাহেবের ২ গার্লফ্রেন্ড লাকি ও হালিমা বিয়ের দিন পরিচয় দেন তারা নাকি আব্দুর রহমান নবীর বোন। আসলে ইমাম আব্দুর রহমান নবীর, সালাউদ্দিন, তাজুল ইসলাম ও দুই গার্লফ্রেন্ড লাকি ও হালিমা তারা কেউ কারো কনিষ্ঠ আত্মীয় না হলেও পূর্বপরিকল্পিত ভাবে তাদের সাজানো বিয়ের নাটকের গল্পটি প্রতারনার স্বীকার ঝর্ণা মুখে শুনে মনে হয় যেন এটি কোন সিনেমার গল্প। বিয়েটি সাজানো হলেও ইমাম আঃ রহমান নবীর তার স্ত্রী ঝর্ণাকে নিয়ে ২ বছর স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে সাংসারিক সব কাজগুলো হয় সত্যি সত্যি । নারায়ণগঞ্জে একটি বাসায় ভাড়া থাকাবস্থায় স্ত্রী ঝর্ণাকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গত ৬/৭ মাস ধরে তার স্বামী আঃ রহমান নবীর আত্মগোপনে আছেন এবং ঝর্ণা তার সব হারিয়ে বর্তমানে তার পিতার বাড়িতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলে জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা জানান। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর গ্রামের আবুল খায়ের ফকিরের মেয়ে জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা এখলাছপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় স্কুলে যাওয়া-আসার সময় মিয়াজি বাড়ী জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান (নবী) পিতা-ওহিদউল্লাহ গ্রাম ইন্দুরিয়া, মতলব উত্তর এর সাথে পরিচয় হয়। কৌশলে ইমাম সাহেব জান্নাতির মোবাইল নাম্বারটি নিয়ে প্রতিদিন ফোন করে তাকে উত্তপ্ত করতে থাকে। এরপর থেকে চলে তাদের প্রেম নিবেদন কথা হয় দুজনের মাঝে বিয়ে করা হবে। এক পর্যায়ে গত ৫ মার্চ ২০১৭ সালে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক তাদের বিয়ে হয় এবং ৫ লক্ষ টাকা কাবিন করা হয়। বিয়ে পড়ান (ভুয়া) কাজী এবং ছেলের ভুয়া দুলাভাই মসজিদের ইমাম তাজুল ইসলাম পিতা-হাফেজ গোলাম মোস্তফা বাড়ী একই উপজেলার হয়লা কান্দি গ্রামে, মেয়ের উকিল বাবা হলেন আরেক ইমাম মোঃ সালাউদ্দিন, বাড়ী পাঁচআনি, বিয়ের পর ইমাম আব্দুর রহমান নবীর তার স্ত্রী জান্নাতি আক্তার ঝর্ণাকে ২৩ আগস্ট ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে তারা দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে জীবন- যাপন করতে থাকেন। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে জান্নাতি আক্তার ঝর্ণার বাবা মারা যাওয়ার পর। আব্দুর রহমান নবীর তার স্ত্রী জান্নাতিকে কিছু না বলে বাসা থেকে চলে যান এবং তার ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা নিরুপায় হয়ে তার শশুর বাড়িতে আশ্রয় না পেয়ে বর্তমানে ৭/৮ মাস ধরে তার পিতার বাড়িতে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা জানান, এ বিয়ে পুরোটাই ছিল আমার স্বামী আব্দুর রহমান (নবীর) নাটক। তারা ৩ বন্ধু ও তাদের ২ গার্লফ্রেন্ড মিলে কেউ ছেলের দুলা ভাই, কেউ ছেলের পরম আত্মীয় আবার তাদের ২ গার্লফ্রেন্ডকে বানিয়েছে ছেলের বোন। তাদের এ সাজানো বিয়ের নাটক আমি কেন? গ্রামের কোন সহজ সরল মেয়ে বুঝতে পারবে না। যেটি আমি বুঝতে পারি নাই। এ রকম বিয়ের নাটক করে না জানি কত মেয়ের সর্বনাশ করেছে এই প্রতারক চক্র। যে কাজী বিয়ে পড়ান মসজিদের ইমাম তাজুল ইসলাম সে (ভুয়া) কাজী এবং বিয়ের দিন আমার স্বামী সে তার যে সকল লোকজন তার আত্মীয় পরিচয়ে আমার বাড়ীতে এনেছিলেন তারা কেউ তার আপনজন না বলে আমি পরে ধীরে ধীরে জানতে পারি এবং আব্দুর রহমান নবীর সাথে আমার বিয়ে হয়েছে একথা বহুবার আমার শশুর-শাশুড়িকে বলার পরেও আমাকে আমার শশুর-শাশুড়ী ছেলের বউ হিসেবে গ্রহন করে নেননি। তারা বলে আমাদেরকে না জানিয়ে আব্দুর রহমান নবী বিয়ে করেছে। এ বিয়ে আমরা মানিনা। এদিকে উকিল বাবা ইমাম সালাউদ্দিন সেও একই নাটক করে বিয়ে করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জে একই বাসায় আব্দুর রহমান নবীসহ ভাড়া থাকতেন বলে জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা জানান। আব্দুর রহমান নবীর বিয়েতে তার বোন পরিচয়ে আসা হালিমা হলো জান্নাতি আক্তার ঝর্ণার উকিল বাবা ইমাম সালাউদ্দিনের গার্লফ্রেন্ড ও লাকি হলো ইমাম তাজুল ইসলামের গার্লফ্রেন্ড। ভূয়া কাজী ইমাম তাজুল ইসলাম মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে ইমামতী করতে গেলে তার কুচরিত্রের কারণে বেশিদিন চাকুরী টিকে না এবং সে ৩টি বিয়ে করেছে বলে জানা যায়। উকিল বাবা ইমাম সালাউদ্দিন সেও বিয়ে করে তার স্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জে একটি বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া থাকতেন। বর্তমানে সেও তার স্ত্রীকে ভরণপোষন না দিয়ে আত্মগোপন করে আছে বলে প্রতারণার স্বীকার জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা জানান। এ ব্যাপারে জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা মতলব উত্তর থানায় গত ৮ জুলাই ২০১৯ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। প্রতারণার স্বীকার জান্নাতি আক্তার ঝর্ণা । স্বামী আব্দুর রহমান নবীরকে তার স্ত্রীর মর্যাদায় গ্রহণ করে নেওয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের কাছে সঠিক বিচার ও সুষ্ঠ সমাধান কামনা করেছেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *