শেরপুরে অন্তঃস্বত্ত্বাকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের মামলায় ৫ আসামি কারাগারে

হারুনুর রশিদ, শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের নকলায় ডলি খানম (২২) নামে অন্তঃস্বত্ত্বা এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর মামলায় ৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১৬ জুলাই, মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের ৩ সপ্তাহের অন্তবর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে তারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত দাস তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামিরা হচ্ছেন নির্যাতিতা গৃহবধূর ভাসুর আবু সালেহ (৫২), সলিমুল্লাহ (৪৪), জা লাখী আক্তার (৩৪), আত্মীয় তোফাজ্জল হোসেন (৫৫) ও তার ছেলে ইসমাইল হোসেন (২০)। একইসাথে মামলায় নেছার উদ্দিন (৪৮) নামে এক সেনাসদস্যের অন্তবর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি হাজির হননি। আদালতে জামিন শুনানীকালে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমান। তাকে সহায়তা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোখলেসুর রহমান আকন্দ ও এডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামান, সিনিয়র এডভোকেট আব্দুর রহিম বাদল। আসামি পক্ষে শুনানী করেন সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মোঃ সিরাজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। ওইসময় জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী, সাধারণ সম্পাদক লুৎফুন্নাহার ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর নীরু শামসুন্নাহার নীরাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা চাঞ্চল্যকর ওই মামলায় ৫ আসামিকে কারাগারে পাঠানোতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সেইসাথে পলাতক অপর ২ আসামিকে গ্রেফতারসহ সকলকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। জানা যায়, গত ২৫ জুন সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট থেকে ৩ সপ্তাহের অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন লাভ করেন ওই ৬ আসামি। এ মামলায় নাসিমা আক্তার নামে অপর এক নারী আসামি হাজতে থাকলেও এখনও পৌর কাউন্সিলর রূপালী বেগম ও তার স্বামী আমিরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। অন্যদিকে একাধিক দফায় চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সেই নির্যাতিতা গৃহবধূর অকাল গর্ভপাতের পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরও জেলা সদর হাসপাতাল থেকে তার এমসি প্রদানে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ মে নকলা উপজেলার কায়দা গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই অন্ত:স্বত্ত্বা গৃহবধূকে গাছে বেঁধে বর্বরোচিত নির্যাতন এবং নির্যাতনে গৃহবধূর গর্ভের সন্তান নষ্টের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ৩ জুন আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী। এরপর নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের দ্রুত পদক্ষেপে গত ১১ জুন এক সেনা সদস্যসহ ওই গৃহবধূর ৩ ভাসুর ও জাসহ ৯ জনকে স্ব-নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *