বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমাধি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমাধি কোথায় হবে এ নিয়ে দলটির মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও মতপার্থক্য। কদিন আগেই জাপার এক বৈঠকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের অনেকেই এরশাদের সমাধির জন্য জায়গা দান করার প্রস্তাব দেন। এরইমধ্যে জাপার শীর্ষ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকায় বনানী সামরিক কবরস্থানে এরশাদকে সমাধিস্থ করা হবে। কিন্তু এরশাদ তথা জাতীয় পার্টির ঘাঁটি খ্যাত উত্তরাঞ্চলের গণমানুষ তাদের প্রিয় নেতাকে রংপুরে দাফনের জোর দাবি তুলেছে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য, মহানগর সভাপতি ও রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘উত্তরাঞ্চলের মানুষের শরীরে একফোটা রক্ত থাকতে আমাদের নেতার সমাধি রংপুরের বাইরে অন্য কোনও সংরক্ষিত এলাকায় হতে দেয়া হবে না। এরশাদের ওছিয়কৃত স্থান রংপুরের পল্লী নিবাসেই তাঁকে সমাহিত করতে হবে। এটা আমাদের এক দফা এক দাবি।’ আগামীকাল মঙ্গলবার এরশাদের মরদেহ রংপুরে আসার পর সেটি যদি ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করা হয় তবে রংপুরের লাখ লাখ মানুষের লাশের ওপর দিয়ে তার লাশ নিয়ে যেতে হবে বলেও ঘোষণা দেন রসিক মেয়র। সোমবার (১৫ জুলাই) রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় জাতীয় পার্টির যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মোস্তাফিজার রহমান। তিনি বলেন, ‘এরশাদের মৃত্যুর পরেও তাঁকে সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে ও জাতীয় পার্টিকে ধংসের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। রংপুর তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষ এই ষড়যন্ত্রকে কোনভাবেই মেনে নেবে না।’এ প্রসঙ্গে জাপার এই প্রেসিডিয়াম সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা ঢাকায় খোলা স্পেসে এরশাদকে সমাহিত করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমরা এরশাদের দেয়া জাতীয় তিন নেতার মাজারের পাশে অথবা সংসদ ভবনের পাশে আসাদ গেট এলাকায় মশিউর রহমান যাদু মিয়ার কবরের পাশে তাঁর সমাধির জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। সরকার সেটা হতে দিচ্ছে না। উল্টো দেশবাসীর প্রিয় নেতাকে সেনানিয়ন্ত্রিত বনানী কবরস্থানে সমাধিস্থ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’বনানী কবরস্থানে সমাধিস্থ করার মাধ্যমে এরশাদকে সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মেয়র মোস্তফা। উল্লেখ্য, গতকাল রবিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এরশাদ। গতকালই বাদ জোহর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার এরশাদের দ্বিতীয় জানাজা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সম্পন্ন হয়েছে। এদিন বাদ আসর বায়তুল মোকাররমে তাঁর তৃতীয় জানাজা শেষে আবারও মরদেহ সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হবে। আগামীকাল নেয়া হবে রংপুরে।