মলান্দহে একটি মাদ্রাসার অপরিকল্পিত সীমানা প্রাচীরে বীর মুক্তিযোদ্ধা অফেদ আলীসহ ৫০ পরিবার গৃহবন্দি

ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি ঃ ইসলামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মেলান্দহের বীর হাতিজা গ্রামে নন- এমপিও ভুক্ত একটি দাখিল মাদ্রাসায় অপরিকল্পিত ভাবে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অফেদ আলীসহ ৫০টি পরিবারের দুই শতাধিক নারী- পুরুষ নিজ বাড়ীতেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের বীর হাতিজা গ্রামে নন- এমপিও ভুক্ত একটি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। এটির নাম বীর হাতিজা হযরত শাহ কামাল (রহ:) দাখিল মাদ্রাসা। বীর হাতিজা গ্রামের পরিত্যক্ত একটি ভবন হযরত শাহ কামাল (রহ:) দাখিল মাদ্রাসা নামে এলাকায় পরিচিত। ওই ভবনের সামনে পুরো মাঠটি ঘাস ফসল ও জঙ্গলে ভরা। এ মাদ্রাসাটিতে দৃশ্যমান কোন ছাত্র-ছাত্রী নেই। কাগজে কলমে এটির ১৫ জন শিক্ষক এবং ৩ জন কর্মচারী থাকলেও তাদের কেউ কখনো এই মাদ্রাসায় আসেন না। মাদ্রাসার পরিত্যক্ত ভবনের চারটি শ্রেণিকক্ষই ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। এই মাদ্রাসায় কখনো ক্লাশ হয়না এবং ছয়মাসে একদিনও মাদ্রাসার অফিস কক্ষ খোলা হয়নি। মেলান্দহের বীর হাতিজা গ্রামের ভুক্তভোগী ময়দান আলী, আব্দুল কুদ্দুস, আক্তার হোসেন, মিস্টার আলী ও মো. জিন্নাহ সহ স্থানীয়রা অভিযোগে জানান, সম্প্রতি সরকারী টাকায় ছাত্র ও শিক্ষক বিহীন বীর হাতিজা হযরত শাহ কামাল (রহ:) দাখিল মাদ্রাসাটির সীমামা প্রাচীর নির্মিত হচ্ছে। অত্যান্ত অপরিকল্পিত ভাবে ওই সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কারণে মাদ্রাসাটির পাশের এলাকায় অবস্থানকারী বীর হাতিজা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অফেদ আলীসহ ৫০টি পরিবারের দুই শতাধিক নারী- পুরুষ নিজ বাড়ীতেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। তারা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পূর্ব থেকেই পাশের খোলা মাঠ দিয়ে যাতায়াত করতেন। অথচ মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ঠিকাদার এবং মাদ্রাসার সভাপতি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম চান এবং ঠিকাদারের কাছে মাদ্রাসা সীমানার পাশ দিয়ে যাতায়াতের জন্য ছোট্ট একটি রাস্তার দাবী করলেও তারা তা আমলে নেননি। তবে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চান জানান, মাদ্রাসার দক্ষিণ সীমানা দিয়ে এলাকাবাসীর জন্য রাস্তা করে দেওয়া হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা অফেদ আলী বলেন, “পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবনের মায়া ত্যাগ করে জোয়ান বয়সে দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধ করে দেশটা স্বাধীন করেছি। স্বপ্ন ছিল যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মাথা উঁচু করে চলবো। অথচ একটি পরিত্যক্ত মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি অন্যায় ভাবে আমার বাড়ীর রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমাদের ৫০টি পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। একটি পরিত্যক্ত মাদ্রাসার অপরিকল্পিত সীমানা প্রাচীর নির্মাণের গ্যারাকলে আমি এখন স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে মাথা উঁচু করে চলতে পারছিনা।” মেলান্দহের দুরমুঠ ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেকুজ্জামান জুবেরী জানান, সরকারী অনুদানে বীর হাতিজা হযরত শাহ কামাল (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। সীমানা প্রাচীর নির্মাণের আগে থেকে যারা মাদ্রাসার মাঠ দিয়ে চলাফেরা করেছেন তাদের জন্য মাদ্রাসার দক্ষিণ সীমানা দিয়ে শিঘ্রই ৬ফুট প্রশস্তের একটি রাস্তা করে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *