টাঙ্গাইলে ব্যবসায়ী হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৩ স্কুলছাত্র গ্রেফতার

সুমন ঘোষ, বিভাগীয় প্রতিনিধি (ঢাকা): টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাড়ি ফেরার পথে আব্দুল জলিল (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ স্কুলছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে অভিযান চালিয়ে ওই তিন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা- উপজেলার সটিবাড়ি এলাকার বেল্লাল হোসেনের ছেলে রাকিব হাসান হিমেল (১৬) এবং অলিপুর গ্রামের মৃত মইন উদ্দিনের ছেলে সাদিকুল ইসলাম সাদিক (১৭)। তারা দুইজনেই রাণী ভবানী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্র। এছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে আশুড়া উত্তর পাড়ার আব্দুল লতিফের ছেলে রাজু আহমেদ (১৫) কে গ্রেফতার করা হয়। রাজু কালামাঝি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকান্ডের পর পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রাখে এবং রহস্য উদঘাটনের জন্য নিরলস কাজ করে। বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিজ নিজ এলাকা থেকে ওই ৩ ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করা। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল যেদিন খুন হন তার পরদিন ছিল হাট। তিনি হাটের আগের দিন রাতে টাকা কালেকশন করে নগদ টাকা নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ছিনতাই করতেই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। আব্দুল জলিল প্রায়ই নগদ টাকা নিয়ে চলাচল করতেন। এ কারণে তিনি ছিনতাই এর শিকার হন। তবে ছিনতাই করে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার সময় জলিল তাদেরকে চিনে ফেলেন। তখন শিক্ষার্থী রাকিব হাসান হিমেল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত এর পর পালিয়ে যায়। শিক্ষার্থী রাজু জলিলের ওপর বেশ কিছুদিন ধরে নজর রাখছিল। এছাড়া সাদিক পুরো বিষয়টি কো-অডিনেশন এবং ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে।
ওসি আরো বলেন, হত্যার কিছুদিন আগে তারা জলিলের ওপর নজর রাখছিল। এ হত্যাকান্ডে যদি আরো কেউ জড়িত থাকেন তাহলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল রাতে জলিল মধুপুর থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে অলিপুরে নিজ বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। টাঙ্গাইল-মধুপুর সড়ক থেকে অলিপুরের বাড়ির দিকের সড়ক ধরে একটু এগোতেই অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তার পথরোধ করে দাঁড়ায়। এরপর তার সঙ্গে থাকা টাকা কেড়ে নিয়ে ব্যবসায়ীর গলাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারি কোপ দেয়। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ওই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জলিলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আব্দুল জলিল অলিপপুর একই গ্রামের কুদ্দু মন্ডলের ছেলে। তিনি ধানসহ বিভিন্ন শষ্যের ব্যবসা করতেন। এ ঘটনায় থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *