হঠাৎ ঝড় ও বৃষ্টিতে সুন্দরবনে পশুর নদীতে ৩০ লাখ টাকার ড্রেজার ডুবি এবং আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির.সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার(বাগেরহাট): বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের সুন্দরবনের পশুর নদীতে ঝড়ে একটি ড্রেজার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে পশুর নদীর বিদ্যার বাহন খেয়াঘাট এলাকায় থাকা বাদল আনলোডিং নামের ড্রেজারটি ডুবে যায়। হঠাৎ ঝড় ও বৃষ্টিতে বাগেরহাটের বেশিরভাগ আম গাছের মুকুল ঝরে পড়েছে। এতে অধিকাংশ গাছে আশানুরূপ আম না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও দুর্বল হয়ে পড়েছে। একারণে মারাত্মক বিড়ম্বনায় পড়েছেন মোবাইল ব্যবহারকারীরা। এদিকে, ঝড়ের সাথে সাথে হওয়া প্রবল বর্ষণ মৌসুমী ফসলের জন্য উপকার হয়েছে বলে চাষী ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। জানা যায়, প্রচণ্ড ঝড়ে ড্রেজারটি কাত হয়ে যায়। এ সময় ভেতরে পানি ঢুকে ড্রেজারটি ডুবে যায়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটে নি বলে জানিয়েছেন মালিক পক্ষ। ড্রেজার মালিক মো. মাসুম জানান, ড্রেজার ডুবে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য বিশ্বজিৎ রায় জানান, মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ড্রেজারটি উদ্ধারে কোন তৎপরতা শুরু হয়নি। এদিকে মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার দুরুল হুদা বলেন, ড্রেজারটি পশুর নদীর কূলের দিকে ডোবায় মূল চ্যানেল দিয়ে নৌ চলাচল ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।হঠাৎ ঝড় ও বৃষ্টিতে বাগেরহাটের বেশিরভাগ আম গাছের মুকুল ঝরে পড়েছে। এতে অধিকাংশ গাছে আশানুরূপ আম না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।বাগেরহাট জেলার সব এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঝড়ে ধান ছাড়া অন্যান্য ফসল ও ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শীতের শেষে হঠাৎ বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুররা কাজ করতে না পেরে ফিরে এসেছে বাড়িতে। ফলে রোজগার হয়নি অনেকের।
শহরের সোনাতলা এলাকার বাসিন্দা স্কেন্দার আলী জানান, মেঘের গর্জনে ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে কিছুক্ষণ পর দেখি চারদিকে অন্ধকার। বিদ্যুতের ঝলকানি আর ঝড়ো হাওয়া বইছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, বাগানের গাছের আমের মুকুল, ছফেদা সব কিছু নিচে পড়ে আছে। শীতের শেষে হঠাৎ এ বৃষ্টিতে আমাদের ক্ষতি হয়ে গেলো। স্থানীয় শেখ সাথী ইসলাম বলেন, বজ্রপাত ও বৃষ্টিতে গাছের লেবুগুলো ঝড়ে পড়েছে। লাউগাছের লতা পড়ে গেছে। আমের মুকুল ঝরে পড়ায় খুব ক্ষতি হয়েছে। এ মৌসুমে নিজের গাছের আম খেতে পারবো কি না সন্দেহ আছে। হতদরিদ্র মো. জাহিদুল ইসলাম শেখ বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির জন্য বস আজকে কাজ করতে নিষেধ করলেন। তাই বাসায় চলে আসছি। শহরের ব্যস্ততম মোড় মিঠাপুকুর পাড়ে রিকশার হুড তুলে বসে থাকা চালক ইব্রাহীম হাওলাদার বলেন, সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়ে বসে আছি। কোনো যাত্রী পাচ্ছি না। আকস্মিক বৃষ্টিতে লোকজন জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। তাই তেমন আয় হচ্ছে না। বাগেরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দিন বলেন, ঝড়ে সামান্য কিছু ক্ষতি হলেও বৃষ্টিতে কৃষির উপকারই বেশি হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে ঝড় না হয়ে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে ধানের ফলন ভালো হবে।