হরিপুরে-মদনটাক পাখির ভালবাসার দেড় যুগ
জে.ইতি হরিপুর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: মদনটাক, মদনটেঁক বা ছোট মদনটেক সিকোনিডাই পরিবারভুক্ত লেপ্টোপ্টাইলোস গণের এক বৃহদাকৃতির জলচর পাখি। বিরল প্রজাতির মদনটাক পাখি গুলো ১৮ বছর ধরে সংসার করছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সিংহারি গ্রামে। গ্রামবাসীদের মমতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে পাখি গুলো। বংশ বিস্তার আর খাবারের সন্ধানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পাখিগুলোর ছুটোছুটিতে মুখরিত গ্রামটি। তবে নিরাপদ আশ্রয় ও পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে দিন দিন কমছে দুর্লভ এই পাখিগুলো-এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। ভারতের সীমান্ত ঘেষা ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার সিংহারি গ্রাম । চার দিকে কোলাহল আর মানুষের বসবাস। পুকুর পাড়ের বাঁশ ঝাড়ে বড় একটি শিমুল গাছে হারিয়ে যাওয়া বিরল পাখি মদন টাকের বাস। ২০০০ সালে ছয়টি মদনটাক পাখি আসে এই গ্রামে। সে বছর ঝড়বৃষ্টিতে দুর্ভোগে কষ্ট পেয়ে কয়েকটি বাচ্চা নিয়ে চলে যায় পাখিগুলো। পরের বছর প্রজননের সময় আবার আসে ১০টি মদনটাক। সে বারও বাচ্চা ফুটিয়ে চারটি ছানা নিয়ে চলে যায় পাখিগুলো । এবার এসেছে ছয় জোড়া পাখি। ডিম পেরে ছানা ফুটিয়েছে চারটি। সংসারে নতুন অথিতিদের পাহারায় সার্বক্ষণিক থাকছে দুটি মা-পাখি। অন্যরা এদিক সেদিক ঘুরে আনছে খাবার। সকাল -সন্ধ্যায় পাখিগুলোর কলরব আর নীড়ে ফিরে আসা যেন এক অপরুপ দৃশ্য। মনমুগ্ধকর স্বর্গীয় দৃশ্য দেখতে ক্লান্ত নেই যেন কারও। মনদটাক দেখতে গ্রামে আসছে অনেকে। আর এই গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধদের চোখে চোখে থাকছে পাখি গুলো। শিকারীদের প্রতিরোধ করছে তারা। এলাকাবাসীরা জানায়, ২০১৬ সালে এই গ্রামে সর্বোচ্চ আসে ৩০টি পাখি। সেবারও শিলা বৃষ্টিতে পাখি গুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। এর পর থেকে কমছে প্রকৃতি ও পরিবেশের বন্ধু এই পাখিগুলো। যেন ১৮ বছরের মায়া মমতার বন্ধনে আবদ্ধ পাখি ও গ্রামবাসী। মদনটাক পাখিগুলোর বিচরনে ওই গ্রামের শোভা বর্ধন করছে। ক্ষেতÑখামারে ক্ষতিকর পোকা-মাকড়, ইদুর খেয়ে উপকার করছে কৃষকের। তাই পাখিগুলো রক্ষা ও অভয় আশ্রম তৈরি করতে প্রশাসনেরও প্রচেষ্টার যেন কমতি নেই। নজড়দারিতে রাখছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাও। পশুপাখি রক্ষা করে ফিরিয়ে আনা হোক সুষ্ঠু-নিরাপদ পরিবেশ। জীববৈচিত্র ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় পাখিগুলো ভুমিকা রাখবে। তাদের সহায়তা এগিয়ে আসবে অনেকে এমন প্রত্যাশা পরিবেশবিদদের।