সুন্দরবনে দেশীয় অস্ত্র, হরিণের মাংস ও ফাইসাপোনা জব্দ, আটক ১০

মনির হোসেন,মংলা: বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বাহিনী পশ্চিম জোনের অপারেশন টিমের সদস্যরা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাসমূহে পৃথক অভিযান চালিয়ে দস্যুদের ফেলে যাওয়া যাওয়া পাইকগান (দেশীয় একনলা বন্দুক) হরিণের মাংস, মাথা ও চামড়া এবং কোটি টাকা মূল্যের ফাইসা পোনাসহ ১০ জনকে আটক করেছে। কোস্টগার্ড বাহিনী পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার গভীর রাতে পশ্চিম সুন্দরবনের কালির খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে জবাইকৃত হরিনের ২ টি চামড়া, ২ টি মাথা ও ১০ কেজি মাংস জব্দ করেছে কোস্টগার্ড বাহিনী পশ্চিম জোনের কৈখালি ষ্টেশনের অপারেশন টিমের সদস্যরা। তবে এ ঘটনায় কোস্টগার্ড কাউকেই আটক পারেনি। জানা যায়, সোমবার গভীর রাতে পশ্চিম সুন্দরবনের কালির খাল এলাকায় একদল হরিণ শিকারী অবস্থান করছে গোপন সূত্রে এমন সংবাদ জানার পর ওই এলাকায় হরিণ শিকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করে কোস্টগার্ড সদস্যরা। তবে রাতের অন্ধকারে বনের ভিতরে থাকা চোরা শিকারীরা কোস্টগার্ডের উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে দ্রুত পালিয়ে যায় । ঘটনাস্থল থেকে ২ টি হরিণের মাথা, ২ টি চামড়া ও ১০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ করা হয়। জব্দকৃত হরিণের মাংস মাথা ও চামড়া কৈখালি ফরেস্ট অফিসের কাছে কোস্টগার্ড বাহিনীর উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
অন্যদিকে একই দিন ভোররাতে সুন্দরবনের বঙ্গবন্ধুর চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪০ লাখ পিচ ফাইসা পোনাসহ ১০ জনকে আটক করে কোস্টগার্ড বাহিনী পশ্চিম জোনের বিসিজি আউটপোস্ট দুবলাচরের অপারেশন টিমের সদস্যরা। জানা গেছে,সোমবার গত সোমবার ভোররাতে সুন্দরবনের বঙ্গবন্ধুর চর এলাকায় নিয়মিত টহলদানের সময়ে নদীতে কয়েকটি ট্রলার দেখতে পায় কোস্টগার্ড সদস্যরা। ট্রলার দেখে সন্দেহজনক হলে ওই ট্রলার ও নৌকায় তল্লাশী করে তারা। সেখান থেকে ৪০ লাখ পিচ ফাইসা পোনা জব্দ করা হয় এবং এ কাজে জড়িত থাকার অপরাধে ১০ জনকে আটক করা হয়। এসময় একটি ইন্জিনচালিত বোর্ট ও ২ টি নৌকা আটক করা হয়। জব্দকৃত ফাইসা পোনার বাজার মূল্য ১ কোটি টাকা। ফাইসাপোনা পরবর্তীতে নদীতে অবমুক্ত করা হয়। অন্যদিকে গত শুক্রবার মংলার সুন্দরবনের চরেরখাল এলাকা থেকে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। কোস্ট গার্ড সদস্যদের অভিযানের মুখে অস্ত্র ফেলে দস্যুরা বনের গহীনে পালিয়ে গেলে ওই এলাকায় তল্লাশী চালিয়ে অস্ত্র দু’টি উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে গত শুক্রবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের হাড়বাড়িয়া সংলগ্ন চরেরখালে একদল বনদস্যু অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড সদস্যরা ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় অভিযানকারীদের উপস্থিতি টের পেয়ে বনদস্যুরা বনের গহীনে পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় তল্লাশী চালিয়ে দস্যুদের ফেলে যাওয়া দুইট পাইপান(দেশীয় একনলা বন্দুক ) উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ওই দিন বিকেলে মংলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কোস্টগার্ড বাহিনী। কোস্টগার্ড বাহিনীর গোয়েন্দা অফিসার লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ আরো জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাসমূহে বনদস্যু জলদস্যুদের অপতৎপরতা রোধে কোস্টগার্ড সদস্যরা নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে, তিনি আরো জানান,চোরা শিকারীরা ও পাচারকারীরা সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির তক্ষক ও হরিণ শিকার করে ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিক্রয় করে থাকে যা সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় হুমকিসরুপ। লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ আরো বলেন, সুন্দরবনে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী চোরা শিকারী ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড বাহিনী নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *