নিজেই নিজের শপথ নিলেন স্পিকার
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৬ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শপথ নিয়েছেন।নিজেই নিজের শপথ নেন তিনি। বেলা ১১টার কিছু সময় পর শেরেবাংলা নগরের সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের প্রথম লেভেলের শপথকক্ষে এ শপথ অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী, স্পিকার নিজেই নিজের শপথবাক্য পাঠ করেন। পরে স্পিকার হিসেবে তিনি নির্বাচিত অন্য সদস্যদের শপথ পড়ান। স্পিকার শপথ বাক্য পাঠ করার পর সামনে নতুন এমপিদের সারিতে থাকা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উঠে দাঁড়িয়ে করতালি দেন।পরে শিরীন শারমিন শপথপত্রে সই করেন। নতুন এমপিরা একসঙ্গে সমস্বরে স্পিকারের সঙ্গে শপথবাক্য পাঠ করেন। সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করানোর আগে নিয়ামানুযায়ী স্পিকার নিজেই শপথগ্রহণ করেন। শপথের পর নবাগত এমপিরা স্পিকারের সামনে শপথ ফরমে স্বাক্ষর করেন এবং গ্রুপ ছবি তোলেন। এ অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে সকাল ১০টা থেকেই এমপিরা সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে শুরু করেন। দশম সংসদের সংসদ নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা একে একে প্রবেশ করতে থাকেন সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের শপথকক্ষে। এমপিরাও হাত নেড়ে সংসদে প্রবেশ করেন। সব মিলে সংসদ ভবন এলাকায় একটি উৎসবমুখর পরিবেশের তৈরি হয়। নিয়মানুযায়ী দুপুরে পার্লামেন্টারি বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে দলনেতা নির্বাচিত হবেন। তার পর দলের নেতা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বলবেন, আমাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে সংসদে। তখন রাষ্ট্রপতিকে তিনি সরকারপ্রধান করার অনুরোধ করবেন। তার পরেই গঠিত হবে নতুন সরকার। এদিকে নির্বাচনে জয়ী হলেও শপথ নেননি বিএনপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। তারা ‘ভোট কারচুপি’ ও ‘অনিয়মের’ প্রতিবাদস্বরূপ সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে সরকারের বৈধতা দেয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তবে আজ শপথ না নিলেও তাদের সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে তাদের শপথ নিতে হবে। তবে সংবিধান অনুযায়ী-সংসদ অধিবেশন শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে তাদের শপথ নিতে হবে, তা না হলে তাদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। আজ শপথ নিলেন আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের ২৮৮ সংসদ সদস্য। এ ছাড়া স্বতন্ত্র আরও তিন জনপ্রতিনিধিও সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আসন গ্রহণের পর জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ শপথগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে। পরে স্পিকার নিজে শপথবাক্য পাঠ করে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান। জানা গেছে, দুপুরে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভাতেই তারা নিজ দলের সংসদ নেতা নির্বাচন করবেন। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে সর্বোচ্চ আসনপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদ নেতা হবেন নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন-এটি অনেকটাই নিশ্চিত। নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির ভূমিকা সংসদে কী হবে, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। বুধবার নির্বাচন-পরবর্তী জাতীয় পার্টির প্রথম প্রেসিডিয়াম বৈঠকের পর জানানো হয়, আজ সংসদীয় দলের সভায় এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদের মতো একাদশ সংসদেও বিরোধী দলে থাকার পাশাপাশি নতুন মন্ত্রিসভাতেও দলীয় সংসদ সদস্যদের রাখার বিষয়ে আগ্রহী দলটি। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮ আসনে জয়লাভ করে। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ আসনে জয়ী হয়। মঙ্গলবার ২৯৮ সংসদ সদস্যের নামে গেজেট জারি করা হয়। বাকি দুটির মধ্যে গাইবান্ধা-৩ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় সেখানে নির্বাচন হয়নি। এ ছাড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের তিনটি কেন্দ্রে পুনর্র্নিবাচন করতে হবে বলে সেখানে ফল স্থগিত রয়েছে।