প্রয়োজনে সেনাবাহিনী আটক করতে পারবে: সিইসি

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে পরিস্থিতি বিবেচনায় ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় সেনাবাহিনী প্রয়োজনে যে কাউকে আটক করতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। সশস্ত্রবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘সেনাবাহিনী সিআরপিসি অনুযায়ী পরিস্থিতি বিবেচনায় আটক করতে পারবে। তবে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।’ আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সশস্ত্রবাহিনী মাঠে থাকবে জানান তিনি। সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধি, কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকরা কি ধরনের কার্যক্রম চালাবেন বা সুযোগ-সুবিধা পাবেন তা নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আচরণবিধি প্রতিপালন নিয়ে আগামী সপ্তাহ থেকে টেলিভিশনগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচার হবে।’
তিনি বলেন, ‘পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- ভোটকক্ষের ভেতরে কোনও লাইভ প্রচার করা যাবে না। কেন্দ্রে সীমিত আকারে সাংবাদিকেদের যেতে হবে, যাতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের অসুবিধা না হয়। বাংলাদেশি পর্যবেক্ষদের জন্য নীতিমালা আছে, বিদেশিদের জন্যও নীতিমালা আছে। সেগুলো মানতে হবে। কেন্দ্রের ভেতরে বেশিক্ষণ থাকতে পারবেন না। লাইভ সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। তবে ভোটকক্ষের বাইরে করতে পারবেন।’এ প্রসঙ্গে সিইসি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ভোটকক্ষের ভেতরে অর্থ্যাৎ কেন্দ্র মানে ঘর। শুধু ঘরের মধ্যে। মাঠ নয়। ঘরে মধ্যে থেকে লাইভ করা যাবে না। গোপন কক্ষের ফটো তোলা যাবে না। বিষয়টি পরিষ্কার। মোবাইল ফোনেও ফটো তোলা যাবে না। যেখানে ভোট পরিচালনা করা হয়, যেখানে পোলিং প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট বসেন, সেখানে লাইভ করা যাবে না। বারান্দায় এসে লাইভ করা যাবে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কাজে যেন ব্যাঘাত না করে, এজন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ভোটকক্ষে একসঙ্গে যদি ৩০-৪০ জন যান, তাহলে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা তো কাজ করতে পারবেন না। প্রিজাইডিং অফিস বলবেন কতজন যেতে পারবেন। প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ব্যবস্থাপনার ওপর রেসপ্যাক্ট থাকতে হবে। তার কথা মানতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোটকক্ষের ভেতরে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। তবে মোবাইল ব্যাংকিং ও ইন্টারনেটের গতি কমানোর সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।’ আচরণবিধি ভঙ্গের ব্যাপারে সিইসি বলেন, ‘আমরা ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাদের কাছে অভিযোগ করলে ভাল হয়। নির্বাচনের দায়-দায়িত্ব বেশিরভাগ রিটার্নিং কর্মরকর্তার হাতে। এছাড়া নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আছে, তাদের কাছেও অভিযোগ দেয়া যাবে।’ বিরোধীদলগুলোর ওপর পুলিশি হামলা ও হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এবং মহাপুলিশ পরিদর্শককে কাল-পরশুর মধ্যেই চিঠি দেব, কোনও প্রার্থী কিংবা প্রার্থীর কর্মী ফৌজদারী অপরাধের সঙ্গে জড়িত না থাকলে যেন তাকে হয়রানি বা গ্রেফতার না করা হয়।’ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে জানিয়েছে সিইসি বলেন, ‘প্রার্থীরা প্রচার কাজ চালাতে পারছে। আমি মনে করি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুবু তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *