গোমস্তাপুরের ভূয়া ডাক্তার কামাল এ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারি করেকোটিপতি
ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধি: কামাল উদ্দিন, পিতা সাইফুদ্দিন অরফে সাফু পাইকাইর, গ্রাম বোয়ালিয়া উপজেলা গোমস্তাপুর, জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বাবার অভাবি সংসারে বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কোন রকম ম্যাট্রিক পাশ করে। পড়া-লেখার খরচ চলাতে না পেরেয়ে ২০০২ সালে টি বয় হিসেবে যোগ দেন রহনপুরের আল হেরা ক্লিনিকে। ক’দিন কাজ করার পর অসৌজন্যমূল আচরনে কারণে চাকরি চলে যায়। পরে আল হেরা ক্লিনিংকে অস্ত্র করে বড় ভাই কাজের সুবাদে থাকে নাচোলে সেখানে এক ঔষধের দোকানে বসে। সেখান থেকে বনে যায় কামাল ডাক্তার। শুরু হয় গোমস্তাপুর, নাচোল, নওগাঁ, শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটের বিভিন্ন ক্লিনিকে এ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারি করার কাজ। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কামাল গোমস্তাপুর উপজেলার ৮টি ক্লিনিক তার মধ্যে অংশিদারিত্ব আছে ৩টিতে ক্লিনিক এর মধ্যে আল মদিনা ক্লিনিক (রহনপুর), ডক্তর ক্লিনিক(চৌডালা), জনসেবা ক্লিনিক(বোয়ালিয়া),নাচোলে ৩টি ক্লিনিক তার মধ্যে ১টিতে অংশ রয়েছে এর মধ্যে মুক্তি ক্লিনিক( নাচোল), শিবগঞ্জ উপজেলার খাসেরহাটে ১টি ক্লিনিক এ অংশ রয়েছে এ’ছাড়া নওগাঁ উপজেলার নিয়ামতপুরের ক্লিনিকেও করেন এ্্যানেসথেসিয়া ও সার্জারির কাজ। রাতারাতি কি ভাবে কোটিপতি বনে গেল ভুয়া ডাক্তার কামাল উদ্দিন এনিয়ে জন মনে নানা প্রশ্নের দানা বাঁধেছে। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট, নিয়ামতপুর ও শিবগঞ্জের ক্লিনিয়গুলোতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নাকের ডোগায় অবৈধ ভাবে এ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারি করে চলেছে তা দেখেও না দেখার ভান করছেন প্রশাসন। জানা গেছে, ভূয়া ডাক্তার কামাল উদ্দিন এ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারি করলে তার পাশে একজন রেজিষ্টার এমবিবিএস ডাক্তারকে দাঁড় করে সার্জারি শেষে প্রেসক্রিপ করে দেন রেজিষ্টার ডাক্তার। তার এ দৌরাত্ম কার খুঁটির জোরে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সে এতগুলো ক্লিনিকের অংশিদারিত্ব হওয়ায় রাতারাতি গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া বাজারে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আলিশান বাড়ী নিমার্ণ করে জনসেবা ক্লিনিক ভাড়া দেয়। কামাল উদ্দিন ম্যাট্রিক পাশ করে কার খুঁটির জোরে মানুষ জবাই কসায়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল রেজিষ্টার ডাক্তারগণও নামপ্রকাশ না করার শর্তে প্রশ্ন তুলেছেন। এদিকে কামাল উদ্দিনের বাড়ী বোয়ালিয়ায় সরজমিন গিয়ে জানান যায়, তার পিতা গরু-ছাগলের ব্যবসা করায় তাকে পাইকার বলেন এলাকার লোকজন। স্থানীয়রা জানান, কামালেরা ৫ ভাই। এর মধ্যে কামাল ভূয়া ডাক্তার এক ভাই ম্যাইছা, এক ভাই খুচরা পোল্টি ব্যবসায়ী, এক ভাই সবজি চাষি এক ভাই নাচোলে থাকেন। বাবা সম্পত্তি মাত্র ৮কাঠা। সামান্য পরিবারের ছেলে কামাল ভূয়া ডাক্তারি করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়াটা আলাউদ্দিনের চেরাগ পাওয়ার মত। কামালউদ্দিনের ব্যাপারে বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানান, কামাল ম্যাট্রিক পাশ করেছিল এমবিবিএস পাশের কথাই নাই। কামাল সার্জারি করে এ কথা তিনি জানেন বলে জানান। ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ২৩ মিনিটে নাচোলের মুক্তি ক্লিনিকের ০১৭৯৯১২১১৪৪ নম্বরে ফোন করে একটি সিজারের রুগি কামাল স্যারকে দিয়ে সিজারের কথা বললে দ্রæত ক্লিনিকে নিয়ে আসতে বলেন তিনি নাকি ১টি সিজার ও ১টি এ্যাপেন্টি সাইট সার্জারি করছেন বলে জানান। এর পরপরই রহনপুর আল মদিনা ক্লিনিকের ০১৭৮৭৯৫৪৯৮৩ নম্বরে ফোন করে কামাল স্যার দিয়ে আমার রুগীর সিজার করবো বলে জানালে আল মদিনা ক্লিনিকের ম্যানেজার আতাউর রহমানের রুগী নিয়ে আসতে বলেন। কামাল স্যার আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলে আছে দ্রæত রুগী নিয়ে চলে আসেন। এ সব ব্যাপারে ভুয়া ডাক্তার কামাল উদ্দিনের ০১৭৬৭৪১৪০৯৮ নম্বরে কথা বললে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে বলতে কাজে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে আবার ফোন দিয়ে এ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারি করেন না বলে জানান। তার বিরুদ্ধে অনেক বার পত্রপত্রিকায় এসেছে কেউ কিছুই করতে পারেনি বলে দাম্ভীকতা বক্তব্য রাখেন এবং ৬ অক্টোবর তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ এসএসএম খাইরুল আতার্তুকের সাথে দেখা করে আসেন এবং তিনি তাকে তার কাজ চালিয়ে চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন বলেই ফোন কেটে দেন। এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ এসএসএম খাইরুল আতার্তুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগকে বলা হয়েছে। তার সাথে ৬ অক্টোর কামাল দেখা করেছেন এ বিষয়টি অস্বীকার বলেন তাকে তিনি চিনেন না কোন দিন দেখেননি বরৈ জানান।