ঝিনাইদহে এক বিধবা হিন্দু পরিবার কে নির্যাতন করে দেশ ছাড়া করল এক হিন্দু পরিবার তার জমি ক্রয় করে বিপাকে এক মুসলিম পরিবার
লালন মণ্ডল, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি: ঘটনাটা ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের চেউনিয়া গ্রামে। এই গ্রামে মনোরঞ্জন মণ্ডল ও শ্যামল লস্কার পাশাপাসি বসবাস করে আসছিল দীর্ঘদিন। প্রায় ৪ বছর আগে মনোরঞ্জন মণ্ডল অসুখে মারা যায়। তার মারা যাওয়ার পর পাশের বাড়ির শ্যামল লস্কার ও তার দুই ভাইয়ের নজর পড়ে মনোরঞ্জন মণ্ডলের বসত ভিটার দিকে। তখন তারা অত্যাচার শুরু করে মনোরঞ্জন মণ্ডলের রেখে যাওয়া বিধবা স্ত্রী রিতা মণ্ডল ও ৩ কন্যাকে। এক পর্যায়ে রিতা মণ্ডল শ্যামল লস্কারকে প্রস্তাব দেয় তাদের জমি ক্রয় করে নেওয়ার জন্য। তখন তারা বলে যে আমারা জমি ক্রয় করব না এবং কাউকে ক্রয় করতে দেব না। এই অবস্থায় রিতা মণ্ডল ও তার মেয়েদের উপর সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি দিতে থাকে। তখন উপায় না পেয়ে রিতামণ্ডল শ্যামল, খোকন ও ভবেস লস্কার সহ সন্ত্রাসী আলমের বিরুদ্ধে গত ২৫/১১/২০১৫ সালে ঝিনাইদহ সদর থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করে। ডায়েরী নং হল ১৩৫০। উলেখ যে সন্ত্রাসী আলম প্রায় ৭/৮ মাস আগে কুস্টিয়ায় বন্ধুক যুদ্ধে মারা যায়। এক পর্যায়ে বিধবা রিতা মণ্ডলের এই গ্রামে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়ে। তখন তার বসত ভিটা কিনতে সম্মত হয় চেউনিয়া গ্রামের মৃত আফসার বিশ্বাসের ছেলে কবির বকুল। তখন রিতা গত ১৩/০৮/২০১৮ ও ১৬/০৮/২০১৮ তারিখে ৬ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা মূল্যে কবির বকুলের ৩ ভাইয়ের নামে ৫৯ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়। যার দলিল নং হল ৭৫৪০ ও ৭৫৯৯। জমি রেজিস্ট্রি করার পর ৩ মেয়ে সহ রিতা মণ্ডল ভারতে চলে যায়।এই ঘটনা নিয়ে চেউনিয়া গ্রামের কবির বকুল সাংবাদিক দের নিকট অভিযোগ করে বলে যে আমি এই জমি ক্রয়য়ের ১০ দিন শ্যামলের সাথে জমি ক্রয় করা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এই সময়ে শ্যামল সহ তার দুই ভাই বলে যে যেহেতু তুমি আমাদের না জানিয়ে জমি কিনেছিস তাই এই জমিতে আসতে দেব না । এই জমি আমাদের নামে লিখে দিতে হবে। এই ঘটনার পর শ্যামলরা জোর করে আমার জমির উপর ছাপড়া বানায়। আমি গ্রামের লোক জন ডাকলে তারা বলে যে তাদের ছাপড়া ভেঙ্গে নিতে কিন্ত তারা না ভেঙ্গে নেওয়ায় আমি ৪/৫ দিন পর ছাপড়া ভেঙ্গে দিই। ঘটনার দিন বিকাল ৩১/৮/২০১৮ তারিখে আমি দোকান ঘর বাজারে আওয়ামীলীগ আফিসে বসে থাকা কালীন পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। আমাকে নিয়ে যেয়ে বলে যে শ্যামলদের নামে লিখে দিতে হবে। তারপরে গ্রামের লোক জন পুলিশ ক্যাম্প থেকে নিয়ে আসে।আমি এখন অসহায় জীবন যাপন করছি। আমি মিডিয়ার মাধ্যমে সরকারের নিকট ন্যায্য বিচার দাবি করছি।দলিল লেখক শক্তিপদ বসু জানান যে রিতা মণ্ডল ঝিনাইদহ রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থিত হয়ে টাকা নিয়ে কবির বকুলদের জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়। সে আমাকে আগেই জানিয়েছিল যে শ্যামলের অত্যাচার বসতভিটার জমি বিক্রি করে চলে যাচ্ছি।মহারাজপুর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম সুজন জানায় যে কবির বকুল সঠিক মুল্য দিয়ে রিতার নিকট থেকে জমি কিনিছে। শ্যামলের দের অত্যাচার করার কারনেই রিতা কে চলে যেতে হয়েছে। ওদের হাত থেকে বাঁচার জন্য থানায় জিডিও করেছিল। এখন ওরা গায়ের জোরেই জমি দখল করে নিচ্ছে।নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইউপি সদস্য জাফর লস্কার জানায় ঘটনা টা আমি শুনেছি বকুল জমি কিনে নিয়েছে। দলিল হয়ে গেছে যার জমি সে বিক্রয় করে দিছে সে ক্ষেত্রে জমি বকুল পাবে। তাছাড়া জমি যারা দাবি করছে তারা কেউ জমি বিত্রেতার শরিক বা আত্মীয় না। তবে এই ব্যাপারে পুলিশ বকুল কে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে নলডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আনোয়ার হোসেন বলে যে তাকে নিয়ে আসার পর আলোচনা হয় যে দুই মাসের মধ্যে শ্যামল বকুল কে টাকা দেবে,তখন বকুল শ্যামলদের জমি লিখে দেবে। যদি দুই মাসের মধ্যে শ্যামলরা টাকা না দিতে পারে তাহলে বকুলের জমি বকুলের থাকবে। নলডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলে যে ঘটনা টা আমি জানি না আমার নিকট কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি।
লালন মণ্ডল