আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই; আদমদীঘিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে শিশু শ্রমিকরা
আদমদীঘি প্রতিনিধি: যে বয়সে শিশুরা বই, খাতা, কলম নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা কিন্তু সে বয়সেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশু শ্রমিকরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন ওয়েল্ডিং, ওয়ার্কসপ, চায়ের দোকান, খাবারের হোটেল, মুদি খানা ও পাইপের দোকানগুলোতে। শিশু শ্রম বন্ধে আইন থাকলেও এর যথাযথ প্রয়োগ নাই বললেই চলে। এই শিশু শ্রম বন্ধের আইনের প্রয়োগ না থাকায় শিশু শ্রম বাড়ার অন্যতম কারণ বলে বিবেচনা করছেন অনেকে। কম টাকায় শ্রম কেনার সুবিধা পেয়ে এ কাজে উৎসাহও যোগাচ্ছে অনেক ব্যবসায়ী ও মহাজনরা। উপজেলার বিভিন্ন ওর্য়াকশপ, চা দোকান বা রেষ্টুরেন্টে খুঁজে পাওয়া কষ্টকর যেখানে শিশু শ্রমিক নাই। এ ছাড়াও কাজের ক্ষেত্রেই মজুরি কম দিতে হয় বলে অনেকেই শিশুদের শ্রমিক হিসাবে ব্যবহার করছেন। আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, পরিবারের অভাবের কারণে অনেক অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে না পাঠিয়ে কাজে পাঠিয়ে দেয়। এমন পরিবারও পাওয়া গেছে যেখানে একজন শিশুর আয় দিয়েই চলে সংসার। ৭ থেকে ১২ বছর অনেক শিশুই বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত। এ সকল কাজের মধ্যে রয়েছে ওয়েলডিং ওর্য়াকশপের কাজ, ভলকানাইজং ওর্য়াশপের কাজ, নির্মাণ শ্রমিকের কাজ, দোকানের শ্রমিকের কাজ, এমনকি স্বাস্থের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন অনেক কাজ। শিশুদের দিয়ে কাজ করানোর কারণ জানতে উপজেলার পশ্চিম বাজার কহিনুর স্টীল এর সত্ত¡ধিকারী পলাশ হোসেন জানায়, আমি শিশুদের দিয়ে কাজকর্ম করায় না। আমার এখানে যে গুলি শ্রমিক কাজ করছে তারা সবাই ২০ বছরের উর্দ্ধে। কিন্তু সরজমিনে দেখা গেছে তার দোকানের অধিকাংশ শ্রমিকই শিশু। ইতিপূর্বে ওই ওয়েল্ডিং এর দোকানে এক শিশু শ্রমিক বৈদ্যুতিক সক খেয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। এরপর আবারও কহিনুল স্টীল ওয়েল্ডিং এ শিশু শ্রমিক দিয়ে অবাধে কাজ করানো হচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই। উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের নাম প্রকাশ না শর্তে ওয়েল্ডিং এক দোকাদার বলেন, এরা খেয়ে না খেয়ে ফুটপাতে ঘুরে বেড়ায়। তাই এদের নিয়ে এসে এক বেলা খাবার ও টাকার বিনিময়ে কাজ দিচ্ছি। মজুরি কমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন বয়স বিবেচনায় আমরা এদের মজুরি দেই। একজন শিশু শ্রমিকের মজুরি ৫০ থেকে ৭০ টাকা কোন ক্রমেই কম হতে পারে না বরং এটা অনেক বেশী মজুরি।