বেনাপোলসহ আশপাশের সীমান্তের বেশিরভাগ স্থানজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া ঈদুল আজহায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুর প্রবেশ বাড়েনি


বেনাপোল সংবাদদাতা: ঈদুল আজহায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরুর প্রবেশ বাড়েনি এবার। সীমান্তজুড়ে দেওয়া কাঁটাতারের বেড়া আর সিসি ক্যামেরার নজরদারি ডিঙিয়ে ভারতে ঢুকতে পারছে না এপারের রাখালরা, আনতে পারছে না গরু। এ অঞ্চলের সীমান্তের যে সামান্য অংশ এখনও কাঁটাতারের বেড়ার আওতায় আসেনি, ভারতীয় রাখালরা সেসব পয়েন্ট দিয়ে স্বল্পসংখ্যক গরু ঢুকিয়ে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।বেনাপোলসহ আশপাশের সীমান্তের বেশিরভাগ স্থানজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে রয়েছে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ নজরদারি। ফলে এই সীমান্ত দিয়ে গরু বা অন্যকোনো চোরাচালান পণ্যের অনুপ্রবেশ এখন কঠিন ব্যাপার। সীমান্তের যেসব এলাকা এখনও সিসি ক্যামেরা কিংবা কাঁটাতারের বেড়ামুক্ত, সেসব এলাকা টপকেও বাংলাদেশিদের যাতায়াতের সুযোগ দিতে নারাজ বিজিবি। বিজিবির সাফ কথা- সীমান্তহত্যা বন্ধ হওয়ার একমাত্র কারণ এটা। ফলে এ ব্যাপারে কঠোরতার কোনো বিকল্প নেই। তবে সীমান্তের সূত্রগুলো জানায়, দু’দেশের জিরো পয়েন্টের যেখানে এখনও কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেই পথ দিয়ে কিছু গরু আসছে। অবশ্য সংখ্যা খুবই কম এবং যা কিছু গরু আসছে তা ভারতীয় রাখালরাই সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এসে দিয়ে যাচ্ছে। অবৈধপথে গরু আনার জন্য বেনাপোলের পুটখালী, অগ্রভূলট, দৌলতপুর ও গোগা এই চারটি গরু খাটালে বর্তমানে সামান্য কিছু গরু আসছে। নাভারণ করিডোরে এসব গরুর ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। কাস্টমসের নাভারন পশু করিডোরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, ঈদ প্রায় সন্নিকটে। কিন্তু সেই তুলনায় ভারতীয় গরু-মহিষ আসার হার একেবারেই কম। বর্তমানে দৈনিক ২০-২৫টির অধিক গরু ঢুকছে না। ভারত থেকে আসা এসব গরুর মধ্যে রয়েছে সিন্ধি, ফ্রিজিয়ান, জার্সি, হরিয়ানা, নেপালি, সম্বলপুরি জাতের।তিনি আরও জানান, গত মে মাস জুড়ে মাত্র ২১৫টি গরু, জুন মাসে ৫২৬টি গরু ও ৫৮টি ছাগল এবং জুলাই মাসে ৯৯২টি গরু ও মাত্র ১১টি ছাগল এসেছে। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার ১০টি এবং শুক্রবার ২১টি গরু ও ১৯টি ছাগল এসেছে।
করিডোর অফিসের হিসাব অনুযায়ী, এ সীমান্ত দিয়ে ২০১৭ সালের প্রথম সাত মাসে ভারত থেকে ৩৫ হাজার ৬৭৮টি গরু আসে। সরকার এ সময় এক কোটি ৭৮ লাখ টাকা ৩৯ হাজার টাকার রাজস্ব আয় করে। চলতি ২০১৮ সালে জুলাই মাস পর্যন্ত সাত হাজার ৫২৬টি ভারতীয় গরু বাংলাদেশে এসেছে। এ থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ২১ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমান্ডিং অফিসার মেজর সৈয়দ সোহেল আহমেদ জানান, ভারত থেকে গরু তেমন আসছে না। ভারত থেকে গরু আনতে কোনো বাংলাদেশি রাখালকে ভারতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ভারতীয় রাখালরা শূন্য লাইনে এসে গরু দিলে আমাদের কোন আপত্তি নাই। গত বৃহস্পতিবার পুটখালী সীমান্তে চোরাচালানবিরোধী গণসচেতনতা সভায় বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ আল-মামুন বলেন, যশোর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশি গরুর রাখালরা যাতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ না করতে পারে সে জন্য বিজিবি সদস্যরা তৎপর রয়েছে।র্শাশা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ জানিয়েছেন, ভারতীয় গরু-ছাগল না এলেও কোরবানির পশুহাটে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। গত তিন বছর ভারতীয় গরু না আসায় খামারিরা দেশি গরু পালনে আগ্রহী হয়েছেন। কোরবানির জন্য যশোরে ২৭ হাজার গরু ও ২০ হাজার ছাগলের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে জেলার প্রায় ১১ হাজার খামার প্রায় ৩৬ হাজার গরু ও ৩২ হাজার ছাগল-ভেড়া সরবরাহ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *