ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিস চরম দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে আরিফ সরকার
সাহিদুল এনাম পল্লব, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফ সরকারের বিরুদ্ধে স্কুল ম্যানিজিং কমিটি গঠন, শিক্ষক এমপিও ভুক্ত করনে ব্যাপক ঘুষ বানিজ্য,অফিসের অর্থ দুর্নীতি ও অফিস হাজিরায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে যে এই দুর্নীতি পরায়ণ অফিসার উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের দায়িত্বে থেকে সে পরিকল্পিতভাবে বিবাদ সৃষ্টি করে প্রত্যেক স্কুল থেকে লক্ষাধিক টাকার বানিজ্য করে প্রতিনিয়ত।জানা যায় যে পানামি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে সে সকল বিধিবিধান উপেক্ষা করে তার ইচ্ছামত কমিটি গঠন করে পিয়নের মাধ্যমে রেজুলেশন খাতা অনুমোদেনর জন্য স্কুলে পাঠিয়ে সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর করিয়ে নিজের অফিসে রেখে দেয়। ইচ্ছামত মনোনয়ন পত্র বাদ দিচ্ছে আবার বাতিল মনোনয়নপত্র পূনর্বহাল করেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও সে ঘোষিত তারিখের পূবেই কমিটি গঠন করে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। তবে প্রধান শিক্ষক জানায় পুরাতন কমিটির মেয়াদ এখনও একমাস আছে।ভোটার তালিকা থেকে অনেক অভিভাবককে বাদ দেওয়ায় তারা ঝিনাইদ সদর আদালতে মামলা দায়ের করে। তখন আদালত কমিটি গঠনে নিষেধাজ্ঞা জারী করে । আদালত অবমাননার দায়ে তার বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না এইমর্মে তাকে শোকজ ও স্বশরীরে হাজির হয়ে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয়। উল্লেখ্য পানামী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামি ২৩/০৯/২০১৮ই তারিখে। নতুন কমিটি গঠনের জন্য নিয়ম অনুযায়ী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পদাধিকারবলে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আরিফ সরকার’র। সে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে গত ৮/৭/১৮ই তারিখে তার স্বাক্ষরীত একটি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে যার স্বারক নং উঃমাঃশিঃঅঃ/ঝিনাইদহ-স/২০১৮/নির্বাচন/১৪৫। উক্ত নির্বাচনী তফসিলে মনোনয়নের শেষ তারিখ ছিলো গত ১৬/০৭/২০১৮ইং বেলা ৪ ঘটিকা পর্যন্ত। নির্ধারীত সময়ের মধ্যে সর্বোমোট ১০টি আবেদন জমা হলেও সে দুইটি আবেদন বাদ দিয়ে আটটি মনোনয়পত্র গ্রহন করে। নির্বাচনের তারিখ ০২/০৮/২০১৮ইং উল্যেখ করা হয়। কিন্তু ২টি বৈধ মনোনয়নপত্র বাদ দেওয়ায় তারা বাদি হয়ে আদালতে মামলা করে এবং আদলত কমিটি গঠন বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে অতি উৎসাহী হয়ে সে এই স্কুলের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শেষ করে বলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের অভিযোগ।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূনীতির অভিযোগ আছে বলে জানা যায়। প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষে দুইটি করে অভিভাবক সমাবেশ বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও সে একটিও বাস্তবায়ন না করে ভুয়া ভাউচার দিয়ে টাকা ওঠিয়ে নেয়।অফিসের মাসিক খরচ বা কন্টিজেন্সির টাকা ওঠিয়ে সে নিজেই বিল ভাউচার জমা দিয়ে প্রত্যেক মাসে সে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করে। অন লাইন এমপিও চালু হওয়ার পর থেকে সে প্রায় ২০০ জন শিক্ষকের এমপিও এবং উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির আবেদনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষকের নিকট থেকে ৫০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে তাদের আবেদন প্রেরণ করে বলে অভিযোগ আছে। প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাকে বড় অংকের টাকা না দিলে সে নিয়োগ ঝুলিয়ে রাখে। স্কুল ভিজিটে গেলে তাকে গাড়ির খরচ বাবদ ২০০০ টাকা করে দিতে হয়। সপ্তাহে তাকে দুই/তিন দিনের বেশি অফিসে পাওয়া যায় না। সকাল ১১টার পর অফিসে আসে এবং তিনটার আগেই চলে যায়। সে ঝিনাইদহে অবস্থান করে না। তার দুইটি পরিবার থাকায় সে কুষ্টিয়াতে ও ঢাকাতে অবস্থান করে। জানা যায় যে তার একটি পরিবার কুষ্টিয়ায় এবং একটি পরিবার ঢাকাতে থাকে তাই সে ঠিকমত অফিসে থাকতে পারে না। এরপূর্বে তার বিরুদ্ধে মহাপরিচালক বরাবর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। সরকারী কেসি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি অভিযোগটির তদন্ত করছে। এরপূর্বে কালিগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকা কালিন ব্যপক দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে কারনে তাকে ঝিনাইদহ সদরে বদলি করা হয়েছিলো। সে যেখানে যেখানে কর্মরত ছিলো সেখানেই সে ঘুষ ও দূনীনির আখড়া বানিয়েছে বলে জানা যায়।গত রবিবার বেলা ১২ টার দিকে এই প্রসঙ্গে জানতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গেলে সাংবাদিক দেখে মোবাইলে কথা বলতে বলতে অফিসের বাহিরে চলে যায়। পরে তারজন্য অপেক্ষা করে চলে আসি। পরে আবার সাড়ে ৩ টার দিকে গেলে তার অফিস বন্ধ পাওয়া যায়। অফিসে উপস্থিত কর্মচারীদের জিজ্ঞাসা করলে বলে যে স্যার লান্স করতে গেছে। তবে ৫ টা নাগাদ বসে থাকার পর তাকে আর অফিসে ফিরে আসতে দেখা যায় না। তার মোবাইলে অনেক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে নাম্বর ব্যস্ত পাওয়া যায়। তারপর একবার রিং হলেও কল রিসিপ না করার কারনে কথা বলা সম্ভব হয় নি।