বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সমালোচনার মুখে নৌপরিবহন মন্ত্রী পদত্যাগ করতেও রাজি
বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সমালোচনার মুখে থাকা পরিবহন শ্রমিক নেতা ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান দুর্ঘটনা সমস্যার সমাধানের জন্য মন্ত্রিত্ব ছাড়তেও রাজি বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি এটাও মনে করছেন, মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে তিনি পদত্যাগ করলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না।সোমবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এমন ভাবনার কথা জানান নৌপরিবহনমন্ত্রী।নৌমন্ত্রী পরিবহন মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সভাপতি। বাসের চাপায় দুই ছাত্রছাত্রী নিহত হওয়ার পর তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ছাত্র বন্ধুদের বলতে চাই, পদত্যাগ করলেই কি এই সমস্যা সমাধান হবে? বাংলাদেশে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য যত কার্যক্রম বিভিন্ন সরকারের সময়ে আমার নেতৃত্বে করতে পেরেছি, প্রত্যেকটি সরকারের সময়ে দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।’ দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাকে মর্মান্তিক ও দুঃখজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক বললেই শেষ হবে না। যারা প্রকৃতপক্ষে দোষী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, এগুলোকে তো কেউ সমর্থন করবে না, তাইনা?’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মালিক-শ্রমিকরা মঙ্গলবার বসবো। পরিবহন সেক্টরে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমাদেরও কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। সেই দায়িত্বগুলো নেওয়ার জন্য আমরা একমত হয়েছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মিটিং করে চালকদের একটা ম্যাসেজ আমরা দিতে চাই।’ তবে বৈঠকটি কোথায়, কখন হবে তা তিনি জানাননি। উল্লেখ্য, রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মিরপুর-উত্তরা রোডের জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস মিরপুর থেকে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে আসছিল। এ সময় ফ্লাইওভারের শেষ দিকে, রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল একদল শিক্ষার্থী। বাসটি ফ্লাইওভার থেকে নেমেই দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় চারজন।
নিহতরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মীম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম।এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও চালকদের ফাঁসির দাবিসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে সড়ক অবরোধের হুমকিও দিয়েছে তারা।এদিকে ঘটনার পরই রবিবার রাত ৮টায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করা হয়।এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুরে তিনটি বাসের দুজন চালক ও দুজন হেলপারসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ সদস্যরা। গ্রেফতারকৃতদের একজন বাসের হেলপার এনায়েত। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।