বাগেরহাটে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরএক যুগ ধরে প্রতিদিন সাঁতার কেটে খাল পারাপার
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট অফিস:বাগেরহাটের মোংলায় খাল পারাপারে সেতু বা সাঁকো এমনকি নৌকাও না থাকায় প্রতিদিন সাঁতার কেটে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। প্রায় এক যুগ ধরে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের সুন্দর তলা গ্রামের মানুষকে সুন্দর তলা খাল সাঁতরে পার হতে হচ্ছে। পারাপারে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
২৬ জুলাই আজ বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দরবন সংলগ্ন সুন্দর তলা খাল পারাপারের সময় কথা হয় গ্রামের ফকির বাড়ির ফজর ফকিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, বছরের ১২ মাস এভাবে খাল সাঁতরে পার হতে হয়। ছোট ভাইয়ের দোকান আছে। দোকানের মালামালও সাঁতরে আনতে হয়। সুন্দর তলা গ্রামের ঘের মালিক বিজন বৈদ্য বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে সাঁকো না থাকার কারণে খাল সাঁতরেই পার হতে হয়। এখানে স্থায়ী কোনো খেয়া নেই। এতে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করতে চায় না। আর রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যে কত কষ্টের তা বলারই অপেক্ষা রাখে না। তিনি আরো বলেন, খালের সাঁকোর জায়গা থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি মসজিদ আছে। সেখানে আমারা হিন্দু-মুসলিম মিলে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছি। সেটির অবস্থাও এখন নড়বড়ে। তাছাড়া এটি অনেক দূর হওয়ার কারণে মানুষ না গিয়ে সাঁতরিয়েই খাল পার হয়ে যায়। সুন্দর তলা গ্রামের গৌর পদ রায়ের স্ত্রী স্বপ্না রায় বলেন, অনেক দিন আগে এখানে সাঁকো ছিল, পরে ব্রিজ হয়েছিল। সেটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সবাই সাঁতরে খাল পারাপার হয়। পুরুষের পাশাপাশি নারী-শিশুরাও সাঁতরে খাল পার হয়। সুন্দরবনের করমজল থেকে না-কি নদীতে কুমির ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নদীতে যদি কুমির থেকে থাকে তবে খালে উঠতে সময় লাগবে না। এই কুমিরের ভয় নিয়েও সবাই খাল সাঁতরে পার হয়। জিনিসপত্র নিয়ে খাল সাঁতরে পার হচ্ছেন বৃদ্ধ। চিলা মনুমিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাফতুন আহমেদ হাওলাদার মুকুল বলেন, আমি গ্রামবাসীর দুর্ভোগের কথা স্থানীয় মেম্বার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান সবাইকে জানিয়েছি। তারা বলেছিলেন সুন্দর তলা খালে ঢালাই ব্রিজ হবে। কিন্তু কবে হবে তা আমরা জানি না। খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ ফুট। আমার স্কুল ছাড়াও এখানে চিলা বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ খাল পাড় হয়ে আমার স্কুলে ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী আসে। অন্য একটি প্রাইমারি স্কুলেও আসে ২৫/৩০ জন । খালের আগায় একটি বাঁশের সাঁকো আছে। প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। এই এক কিলোমিটার পথ বেশি পার হয়ে কেউ কেউ স্কুলে আসে। আবার খাল সাঁতরে পার হয়ে আসে কেউ কেউ। তিনি শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর দূর্ভোগ লাঘবে দ্রুত একটি ভালমানের ঢালাই ব্রিজের দাবি করেন। ৬নং চিলা ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য হালিম শেখ বলেন, খালটিতে দুইবার বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। খালে জেলেরা ট্রলার নিয়ে চলাচল করেন বলে ধাক্কা লেগে ভেঙে যায়। এখন ঢালাই ব্রিজ হবে, ব্রিজের জন্য বর্তমান এমপি মহদয়কেও জানানো হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা ও জেলায় আলাপ আলোচনা হয়েছে। খুব শীগ্রই এখানে ব্রিজ হবে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন জানান,চিলা ইউনিয়নের মধ্যে সুন্দরতলা খালে একটি ব্রিজের একান্ত প্রয়োজন। দীর্ঘদিন যাবত ওখানে ব্রিজ নেই, প্রায় এক কিরোমিটার দুড়ে সামান্য বাশের সাকো দিয়ে ঝুকির মধ্যে লোকজন পারাপাড় হচ্ছে। এছাড়াও ওখানে তিন তিনটি স্কুরোর ছাত্র/ছাত্রীরা আসা যাওয়া করে, আমি এমপি ম্যাডামকে জোর কের বলেছি দ্রুত খালে ব্রিজ তৈরী করে দেয়ার জন্য