এ বছরও চিকুনগুনিয়ার প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে চিকুনগুনিয়ার ঝুঁকি বেশি


বছর পেরিয়ে গেলেও মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ চিকুনগুনিয়ার ব্যথা এখনও অনুভব করেন কেউ কেউ। সর্বাঙ্গে গিঁটে গিঁটে এ ব্যথা অনুভূত হয়। গেল বছর রাজধানী ঢাকায় প্রায় ৫ শতাংশ লোক অর্থাৎ প্রায় ১০ লাখ মানুষ চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল অনেকটা মহামারি আকারে। এ বছরও চিকুনগুনিয়ার প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে বেশ কিছু লোক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। জেলার প্রায় অর্ধশত মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন, জনস্বাস্থ্য ও ভাইরোলজি বিভাগের ৩ জন চিকিৎসক রাজধানীর বাউনিয়া এলাকার ৪০৩ জন মানুষের রক্ত নমুনা পরীক্ষা করে এ গবেষণা চালান। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এ গবেষণার ফল প্রকাশ হবে।তবে গবেষকদের মতে, ঢাকা শহরে এ বছরও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এবারও চিকুনগুনিয়ার বড় ধরনের প্রকোপ দেখা দেয়ার ঝুঁকি আছে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর চিকুনগুনিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মৌসুম।অবশ্য, গেল বছর চিকুনগুনিয়ায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের এবার দুঃশ্চিন্তার কারণ নেই। গবেষকরা বলছেন, যারা ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। ফলে তাদের আর চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। অর্থাৎ, উল্লিখিত ৫ শতাংশ মানুষ শঙ্কামুক্ত থাকলেও বাকি ৯৫ ভাগ মানুষেরই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন গবেষকরা। মূলত, চিকুনগুনিয়া এক ধরনের মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। এডিস এজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির স্ত্রী মশার দ্বারা এ ভাইরাস একজন থেকে অপর জনে ছড়িয়ে পড়ে। বাসাবাড়ির কোণাকানায় জমে থাকা বদ্ধ পানিতেই এ মশার বংশবিস্তার হয়ে থাকে। তাই যেহেতু জুলাই থেকে আগস্ট মাসকে চিকুনগুনিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলা হচ্ছে- অতএব এই সময়টাতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে- বাসাবাড়ির আশপাশের বদ্ধ পানি নিয়ে। কোথাও কোনও হাড়ি ভাঙা কিংবা গর্তে জমে থাকা পানি থাকলে তা যত দ্রুত সম্ভব অপসারণ করে ফেলতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন ঘুমোনোর আগে মনে করে অবশ্যই মশরিটা টানিয়ে নিতে হবে। শুধুমাত্র সচেতনতাই আপনাকে ও আপনার চারপাশের মানুষকে এই রোগের ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *