ইলিশের অভয়ারণ্যে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র! ইলিশ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে
বাংলাদেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১২ ভাগ হলো ইলিশ। দেশের জিডিপির ১ শতাংশে রয়েছে এর অবদান। প্রায় ৫০ হাজার জেলে এই মাছের ওপর নির্ভরশীল।ইলিশ কেবলমাত্র আমাদের জাতীয় মাছই নয় জাতীয় সম্পদও বটে। জাতীয় এই সম্পদ রক্ষায় ইতোমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ২,৪০০ মেগাওয়াট রূপপুর পরমাণু প্রকল্পের দ্বিতীয় বিদ্যুৎ প্লান্টের জন্য যে স্থানটি নির্বাচন করা হয়েছ, তা ইলিশের অভয়ারণ্য।ইতোমধ্যে মেঘনা নদীর তীরে বরিশাল জেলার হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের মধ্যবর্তী স্থানে দুই হাজার একর জমি নির্বাচন করছে বাংলাদেশ আনবিক জ্বালানি কমিশন। স্থানটি। এলাকাকেই সরকার সম্প্রতি ষষ্ট ইলিশ অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছিল।প্রকল্প পরিচালক এ এফ এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎ প্লান্টটির জন্য আমরা তিন-চারটি জায়গা দেখেছি। পানির প্রাপ্যতা ও জনসংখ্যার বিচারে এটিকেই আমাদের কাছে সবচেয়ে ভালো মনে হয়েছে।’মৎস্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশ বছরে ৪৯৬,৪১৭ টন ইলিশ উৎপাদন করেছে। রফতানির মাধ্যমে এ থেকে বৈদেশিক মুদ্রাও এসেছে। ধরা পড়া ইলিশের মধ্যে ৬৫ ভাগ সাগরের, বাকিটা নদীর।বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র প্রিন্সিপাল রিসার্চ অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, ‘ইলিশ হলো বিশ্বের সবচেয়ে স্পর্শকাতর জলজ প্রাণির অন্যতম। এতে সতর্কভাবে পরিচর্যা করা প্রয়োজন। পরমাণু ও বিদ্যুৎচালিত বিদ্যুৎ প্লান্টের মতো ভারী শিল্প অভয়ারন্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’তিনি বলেন, ‘পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রচুর পানির দরকার হয়। নদী থেকে পানি তুলে এর টাওয়ারকে ঠাণ্ডা করে গরম পানি আবার নদীতেই ফেলা হয়। এই গরম পানি সাধারণত মাছসহ নানা জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে করে পুরো প্রতিবেশব্যবস্থাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’এ ব্যাপারে এ এফ এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা আমাদের হাতে পাওয়া সেরা জায়গাটিই নির্বাচন করেছি। আমরা এখন পরিবেশগত মূল্যায়ন করব। যদি দেখা যায়, ইলিশ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তবে আমরা অবশ্যই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’