দাকোপে এক জেলেকে জবাই করে হত্যা


তবিয়াজ সরকার,দাকোপ(খুলনা)প্রতিনিধি: দাকোপের পল্লীতে এক মৎস্য জেলেকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ লাশ উর্দ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনার ৩ দিন আগে হত্যার হুমকি দেওয়ায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহের তীর স্থানীয় খাসখাল ইজারাদার লতিফ সানা গংদের দিকে।এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়নাগর গ্রামের রাজ্জাক সানার পুত্র নাসির সানা (৩৭) প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার বিকেলে জয়নাগর ঠাকুরুন বাড়ী খাস খালে মাছ ধরতে যায়। কিন্তু রাতে বাড়ীতে না ফেরায় পরেরদিন অর্থাৎ গতকাল বুধবার সকালে তাঁর স্ত্রী সখিনা বিবি মেয়েকে সাথে নিয়ে সেখানে খুজতে যায়। খোজাখুজির এক পর্যায়ে খালের মধ্যে নেটজালের নীচে নাসিরের লাশ দেখতে পায়। হাত পা বাঁধা এবং ঘাড়ের পিছন দিক থেকে জবাই করা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। এ সময় তাদের চিৎকারে লোকজন এসে নৌকা যোগে লাশ বাড়ীতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে দাকোপ থানা পুলিশ লাশ উর্দ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসে। ঠাকুরুনবাড়ীর ওই খালের ইজারা নিয়ে ইজারাদার একই এলাকার সোনাই সানার পুত্র লতিফ সানা গংদের সাথে নিহত নাসিরের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। নাসিরের দাবী খাল ইজারামুক্ত থাকবে তারা সেখানে মাছ মেরে জীবিকা নির্বাহ করবে। অপরদিকে লতিফ গংরা কোনভাবেই জেলেদের খালে নামতে দিবেনা এই ছিল বিরোধের কারন। অন্য কোন আয়ের উৎস্য না থাকায় নিষেধ উপেক্ষা করে নাসির ওই খালে মাছ মেরেই সংসার চালাত। জানা যায় গত বছর লতিফ সানার নেতৃত্বে নাসিরের মাছ ধরার আটনপাটা ভাংচুর করা হয়। যে কারনে নাসির লতিফ সানা গংদের বিরুদ্ধে কামারখোলা ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করে। হত্যাকান্ডের ৩ দিন আগে গত শনিবার লতিফ সর্বশেষ বাড়ীতে এসে নাসিরকে খালে না যাওয়ার হুমকি দিয়ে বলে “এবার খালে গেলে তোর লাশ ফেলে দেব” এমন দাবী নিহতের স্ত্রী সখিনা বেগমের। এ ব্যাপারে কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডল বলেন, শনিবারের হুমকির বিষয়টি নাসির আমাকে মৌখিকভাবে জানায়। আর গত বছর তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি লতিফ সানা গংদের নোটিশ করে পরিষদে ৩ বার আহবান করি, কিন্তু তারা সাড়া না দেওয়ায় আমি নাসিরকে বিষয়টি নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদনের পরামর্শ দেই। সখিনা বেগম জানায় রাতে সে বাড়ীতে না ফেরায় রাত ২ টার দিকে তাকে ফোন দিলে নাম্বার বন্দ বলে। ভোরে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোজ নিয়ে না পেয়ে খালে গিয়ে লাশ উর্দ্ধার করি। নিহতের স্বজন এবং এলাকাবাসীর ধারনা খালের দখল বজায় রাখতে লতিফ সানার নেতৃত্বে ইজারাদাররা পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে। ঘটনার পর থেকে সন্দেহভাজনরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে। এ ব্যাপারে দাকোপ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাবুদ্দিন চেীধুরীর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর এস আই মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উর্দ্ধারসহ প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। হত্যাকারী যে বা যারা হোক অচিরেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *