মহেশপুরে মাদ্রাসার ৩ ছাত্রকে বলৎকার করলেন প্রধান শিক্ষক, ইউনিয়ন পরিষদে বিচারকার্য্য সুসম্পন্ন !
স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের মহেশপুররে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মাদ্রাসার ৩ ছাত্রকে বলৎকার ,ইউনিয়ন পরিষদে বিচারকার্য্য সুসম্পন্ন হয়েছে ! ৩ ছাত্রকে বলাৎকারের লিখিত অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষককে চাকুরিচুত্য ও জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার পান্তাপাড়া ইউপির হুসোর খালি কওমিয়া মাদ্রাসায়। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রাম আদালতে হুসোর খালি কওমিয়া মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক মুফতি মাহমুদুল হাসান হুমায়ুনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় মাদ্রাসা থেকে তাকে চাকুরিচ্যুত ও জরিমানার রায় দেওয়া হয়। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, ২০১৬ সালের শেষের দিকে হুসোর খালি কওমিয়া মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক মুফতি মাহমুদুল হাসান হুমায়ন তার মাদ্রাসার ইয়াছিন আরাফাত ও জুবাইর হাসান নামের দুই ছাত্রকে বলাৎকার করেন। বলাৎকারের কথা উক্ত মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ওমর ফারুককে জানান তারা। ওমর ফারুক বলাৎকারের শিকার ইয়াছিন আরাফাত ও জুবাইর হাসানের কাছে লিখিত অভিযোগ চাইলে তারা লিখিত অভিযোগ দেন।পরে ওমর ফারুক মেনেজিং কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারী জাহাঙ্গীরকে সাথে নিয়ে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান হুমায়ুনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে ঘটনাটির সত্যতা শিকার করে ক্ষমা চান তিনি। পরে মাদরাসার সন্মান রক্ষার্থে ভবিষ্যতে এধরনের কাজ না করার হুঁশিয়ারী করে দেন তারা। কিন্তু কিছুদিন গত হওয়ার পরে তিনি আবারো হাসনাত আলী নামের আরেক ছাত্রের সাথে এ ধরণের কাজ করেন। হাসনাত আলী কয়েক জন বন্ধুকে জানান, হুমায়ন স্যার তার সাথে খারাপ কাজ করেছেন এবং সে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি চলে যায়। সে আর এ মাদ্রাসায় পড়বে না বলে তার মা-বাবাকে জানান। মাস খানেক আগে হাসনাতের পিতা পান্তাপাড়া ইউনিয়নের ১নং মথুরাপুর ওয়ার্ডের বাসীন্দা মিনারুল ইসলাম হুসোর খালি গ্রামে আসলে লোক মুখে জানতে পারেন হুসোর খালি কওমিয়া মাদ্রাসায় হাসনাত সহ ৪-৫জন ছাত্রকে হুমায়ন স্যার বলৎকার করেছে। বাড়ি গিয়ে ছেলের মুখে ঘটনার সত্যতা শুনে গত ৮ইজুন বলাৎকারের বিচার চেয়ে আবেদন করেন বলে জানান হাসনাতের পিতা মিনারুল ইসলাম। বলাৎকারের শিকার ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র-হাসনাত জানায়-হুমায়ন স্যার আমার সাথে জোর পূর্বক কয়েক বার খারাপ কাজ করেছে। ৩নং পান্তাপাড়া ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান ও গ্রাম আদালতের সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান-তিন ছাত্রকে বলৎকারের লিখিত অভিযোগে ২৮-৬-২০১৮ ইং বৃহস্পতিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত বসে। গ্রাম আদালতে মাদ্রাসা শিক্ষক হুমায়ন এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য প্রমানিত হওয়ায় গ্রাম আদালতের বিচার বোর্ডের সিদ্ধান্ত মতে হুমায়নকে মাদরাসা থেকে চাকুরিচ্যুত, জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়া ও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্র বলৎকারের ঘটনা মেনেজিং কমিটির সভাপতি ও অন্য কাউকে না জানিয়ে গোপন রাখার অপরাধে সহকারী শিক্ষক ওমর ফারুককেও চাকুরিচ্যুত করার আদেশ দেয়াহয়েছে ম্যানেজিং কমিটিকে। গ্রাম আদালতে বলৎকারের বিচার দেখতে ইউপির শত শত জনতা উপস্থিত ছিলেন। বলৎকারের সঠিক বিচার হয়েছে বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অনেকেই।