দিনাজপুরে শিশুদের ঈদের আনন্দ আতঙ্কে পরিণত নাগরদোলা ভেঙ্গে ৪ জন আহতের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।।
মো: আফজাল হোসেন ফুলবাড়ী দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুর পুলিশ ক্যাফেটারিয়ার সামনের মাঠে শিশুদের ঈদের আনন্দ আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। নাগরদোলা ভেঙ্গে ৪ জন আহত এবং ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক অবস্থায় এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জানা গেছে, ঈদের প্রথম দিন দিনাজপুর শহরের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করার পর বিকেল বেলা পুলিশ ক্যাফেটারিয়ার সামনের মাঠে একটু নির্মল বিনোদনের খোঁজ করছিলেন। ঈদকে কেন্দ্র করে মাঠে বসানো মেশিন চালিত নাগর দোলার একটি অংশ ছিড়ে পড়ায় মুহূর্তের মধ্যে শিশু-কিশোরদের ঘন আনন্দ আতঙ্কে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে মাঠে ঘুরতে নারী, পুরুষ ও শিশু-কিশোররা আতঙ্কে দিক-বিদিক ছুটতে থাকে। মাঠে ঘুরতে আসা অনেকে জানালেন তারা পরিবারসহ এই নাগরদোলায় উঠেছিলেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা প্রায় ৬টার পরে নাগরদোলার একটি অংশ ছিড়ে পড়ে যায় এবং নাগদোলায় অবস্থানরত অনেক শিশু-কিশোরা আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর একটি দল ঘটনাস্থলে এসে শিশু-কিশোরদের নাগরদোলা থেকে মই দিয়ে নামিয়ে উদ্ধার করে। এ সময় মাঠে অবস্থাকারীরা অনেকে জানান, নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের নাকের ডোগায় পুলিশ ক্যাফেটারিয়ার সামনের মাঠে কিভাবে এই বিনোদনের মেলা চালানোর অনুমতি দেয়? তারা আরও বলেন, দিনাজপুর গোর-এ শহিদ বড় ময়দানে বিনোদনের এই মেলা বসিয়ে মাঠের নির্মল পরিবেশ কঠোরভাবে বিঘিœত করা হচ্ছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুনাফা খোররা মনতা ডেকোরেটর এর নেতৃত্বে টাকার লোভে পড়ে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ঢাকা থেকে মনোয়ার হোসেন তার লোকজন দিয়ে দুটি সাম্পান, একটি স্লিটার, দুটি ট্রেন, একটি সুইং চেয়ার ও দুইটি ছোট-বড় নাগরদোলা পরিচালনার মাধ্যমে মানুষের মূল্যবান জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সিনিয়র অফিসার মোঃ আখতার হামিদ খান জানান, আমরা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করি। এরপর নাগরদোলা থেকে পড়ে যাওয়া ইয়াসমিন (১৫) পিতা-মনসুর আলী সাং-খানপুর, নোভা (১২) পিতা-গোলাম ফারুক সাং-২নং উপশহর, হাবিবা (১০) পিতা-হাবিবুর রহমান সাং-আন্ধারমুহা চিরিরবন্দর, আরজিনা আক্তার সাথী স্বামী-শহিদুল আলম সাং-চৌহারা দিনাজপুরগণকে আহত অবস্থায় এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পুরোপুরি তদন্ত ছাড়া কিছুই বলা যাবে না। তবে দুর্বল অবকাঠামো ও অতিরিক্ত আরোহী নেয়ার কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। হাসপাতালে আহত নোভার পিতা গোলাম ফারুক বলেন, নাগরদোলার পক্ষ থেকে মনতা ডেকোরেটরের মালিক মনতা এসে বলেন, আপনারা নিজ থেকে আহতদের জন্য চিকিৎসার খরচ বহন করুন পরবর্তীতে আমরা চিকিৎসার যাবতীয় খরচ আমাদের পক্ষ হতে আপনাকে প্রদান করা হবে। তিনি আরও বলেন, নাগরদোলার যে অংশটি ভেঙ্গে পড়ে গেছে সেটি আগে থেকেই ভাঙ্গা ছিল। সেটি তার কন্যার নিকট হতে জানতে পেরেছেন। দিনাজপুরে পুলিশ বিভাগের সামনের মাঠে শিশু কিশোরদের বিনোদনের জন্য নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে নাগরদোলা সহ যেসব বিনোদন উপকরণ আনা হয়েছে সে কারণেই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটছে। তাই, জরুরী ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ বিভাগের নিকট সুশিল সমাজের একটাই দাবী শিশুদের এই বিনোদন মেলা বন্ধ করে মানুষের জীবন ঝুঁকির নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। বর্তমানে ৪ জন আহতের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।