সরকারী স্কুল মাঠের মধ্যে দিয়ে রাস্তা নির্মাণে বাগাতিপাড়ায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ


বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদদাতা: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানুর বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ সঠিক নয় দাবী করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু। সূত্রে জানা যায়, উপজেলা চত্বরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত প্রাচীন বিদ্যাপীঠ পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, যা ১৯২৮সালে স্থাপিত। পেড়াবাড়িয়া মহল্লার মরহুম ফাঁকন আলী মন্ডল ১একর ৪৩শতক সম্পত্তি বিদ্যায় প্রতিষ্ঠাকালে দান করেন। সেই দানকৃত সম্পতির খাজনা অদ্যবদি নিয়মিত পরিশোধ করছেন প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর। স্কুলের কিছু সম্পত্তি ও কক্ষ এখনও বেদখলে রয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে বেশ কিছু স্থানীয় এবং জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও বেদখলে যাওয়া সম্পত্তি ও কক্ষ উদ্ধারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় নি। সম্প্রতি ২০১৭-১৮অর্থ বছরে ওই প্রতিষ্ঠানের গেটসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়। সকল নিয়ম মেনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও অভিযোগ উঠেছে সীমানা প্রাচীরের একাংশের কাজ করতে নিষেধ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু। এভাবে স্কুল মাঠের ভিতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হলে স্কুলের সৌন্দর্য্য ও পরিবেশ দুটোতেই প্রভাব পড়বে। রাস্তাটি নির্মাণ করা হলে ভারি যানবাহন চলাচল করবে এতেকরে কোমলমতি শিশুদের প্রাণ নাষের হুমকির আশংকা করছেন স্থানীয়রা। বিষয়টির সমাধানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য নাটোর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেন।পেড়াবাড়িয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমিদানকারী মরহুম ফাঁকন আলী মন্ডলের ছেলে মুনতাজুর রহমান বলেন, ‘আমার পিতা জমিদান করেন শিক্ষার জন্য, বিদ্যালয়ের মধ্যে দিয়ে রাস্তা নির্মাণের জন্য নয়। বিদ্যালয়ের মোট জমির মধ্যে প্রায় নয় শতক জমি ও দুটি কক্ষ এমনিতেই দীর্ঘদিন যাবৎ বেদখলে রয়েছে। তা উদ্ধারতো হচ্ছেই না। বরং নতুনভাবে স্কুলের ভিতর দিয়ে রাস্তা করার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি খুব দুঃখ জনক।’ প্রশাসন ইচ্ছা করলে তাদের সরকারী জমি দিয়ে রাস্তাটি করতে পারেন বলে জানান তিনি।গেটসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হেলাল উদ্দিন নাসির দাবী করেন, ‘আমাকে মৌখিকভাবে ইউএনও স্যার পূর্ব পার্শ্বে কাজ বন্ধ করে স্কুলের মাঝ দিয়ে রাস্তা বাদ রেখে সীমানা প্রাচীর দিতে বলেন। আমি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কাজ শুরু করবো।’অভিযোগকারী স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বাগাতিপাড়া পৌর কাউন্সিলর আজিজুর রহমান দাবি করেন, ‘স্কুলের জমির মাঝ দিয়ে রাস্তা করার বিষয়ে পরিচালনা কমিটিকে উপজেলা প্রশাসন কোন লিখিত সিদ্ধান্ত জানানো বা কোনরুপ মিটিং করা হয় নি। তবে রাস্তা যদি করতেই হয় তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিখিত সিদ্ধান্ত দেয়ার দাবী করেন অভিযোগকারী।ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্কুলের ভিতর দিয়ে রাস্তা করার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ফালতু। আমি স্কুলের জমির মাঝ দিয়ে রাস্তা করতে বলিনি।’ কিন্তু পরে আবার রাস্তা ও ড্রেন রেখে স্কুলের জমিতে স্থাপিত ইউআরসি ভবণ ও স্কুল এরিয়া আলাদাভাবে সীমানা বেষ্টিত করার কথা ঠিকাদারকে বলা হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।এব্যাপারে নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম আমিরুল ইসলাম বলেন, স্কুলের জমির ভিতর দিয়ে কোনভাবেই রাস্তা হতে পারে না। ইউআরসি ও বিদ্যালয় ভবণ একই জমিতে তা আলাদা করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *