রোহিঙ্গাদের সংকট উত্তরণে তিন বছরে ৩০ কোটি ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা সরকার
জাতিগত নিপীড়নের মুখে নাফ নদী ও সাগর পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এখন চরম সংকটের মধ্যে দিনযাপন করছে। বিশেষত, এই বর্ষা মৌসুমে তাদের ভোগান্তির যেন কোনও শেষ নেই। কক্সবাজারে প্রায় প্রতিটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিনরাত জীবনের অনিশ্চয়তার আহাজারি চলছেই। এমন অবস্থায় রোহিঙ্গাদের সংকট উত্তরণে তিন বছরে ৩০ কোটি ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা সরকার।স্থানীয় সময় গত বুধবার রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কানাডার কৌশল তুলে ধরে এ অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।ঘোষণায় তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক ত্রাণ সহায়তা, তাদের জন্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বসতিতে স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত ও সময়োপযোগী উপায়ে’ এই সহায়তা দেয়া হবে। ট্রুডো বলেন, ‘আমাদের বর্তমান উদ্যোগ এবং সামনে এগোনোর লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের’ ভিত্তিতে এই কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে।’যখন রোহিঙ্গা সম্প্রদায় ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের শিকার হবে তখন কানাডা অলস বসে থাকবে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক দায়িত্ববোধ থেকে আমরাও কাজ করবো।’এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া দেশগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে অনন্য মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় বাংলাদেশেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রুডো।গত বছর অগাস্টে রাখাইনে নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের ঢল নামলে সৃষ্ট মানবিক সংকট মোকাবিলায় প্রথম দিকে সাড়া দেয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম কানাডা। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বেশি সহায়তাকারী দেশগুলোরও একটি কানাডা।উল্লেখ্য, জাতিগত নিধনের মুখে গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে নতুন করে কমপক্ষে ৬ লাখের মতো রোহিঙ্গা সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে এত সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে লম্বা সময় ধরে আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এ নিয়ে মিয়ানমার সরকার বিভিন্ন টালবাহানা করলেও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়। যা এখনও অব্যাহত।