কক্সবাজারে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার
মোঃ নিজাম উদ্দিন, কক্সবাজার প্রতিনিধি:বস্তাবন্দি একটি লাশ উদ্ধারের পর তাকে পরিবারের সদস্য খালেক বলে শনাক্ত করেছে কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ার একটি পরিবার। লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় খালেকের স্ত্রী জোবাইদা বেগম, স্ত্রীর বড় বোন মোবারকা ও ভগ্নিপতি ফারুককে পুলিশ সন্দেহজনক আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি দাফনের ১১ দিনের মাথায় কথিত হত্যার শিকার খালেককে গত বৃহস্পতিবার জীবিত উদ্ধার করেছে জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল। তাহলে দাফনকরা লাশটি কার? এ নিয়ে ধুয়াশা যেন কাটছে না। কেউ কেউ বলছে উদ্ধার করা লাশটি টেকনাফের সাইফুল নামে এক ব্যক্তির। তিনি সাবরাং পুরাতন পাড়ার মৃত আবদুর রশিদের পুত্র। এ ঘটনায় পুরো জেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল ঈদগাঁও কলেজ গেটের পশ্চিমে ছড়ায় বস্তাবন্দী একটি লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরী করে মর্গে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি দাফনের জন্য আঞ্জুমানে ইত্তেহাদকে হস্তান্তর করার সময় সদরের ঝিংলজার মৃত আবু ছৈয়দের পুত্র আবদুল খালেক বলে শনাক্ত করে তার স্বজনরা। পরদিন স্থানীয় মসজিদে জানাযা পরবর্তী দাফন করা হয়। সেদিন তার স্বজনরা আবদুল খালেককে তার স্ত্রী জোবাইদা হকের ইন্দনে শ্বশুর পক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ নাসীতে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে থানায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রীসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এর কয়েক দিন পর থেকে আবদুল খালেকের নাম দিয়ে কে বা কারা তার স্বজনদের কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে নিজেকে খালেক পরিচয় দিলে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। একই ভাবে তার স্ত্রীর পরিবারের মাঝেও কল করে খালেক পরিচয় দিলে নড়েচড়ে বসে শাশুড় পক্ষ। তারা নাম্বারগুলো গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে দেয়। ডিবি পুলিশও দাফনের ১১ দিন পর কেন মৃত ব্যক্তির মোবাইল থেকে কল আসবে, তা জানতে তৎপর হয়ে উঠে। তারা কললিষ্ট ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কথিত লাশ আবদুল খালেককে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বার আউলিয়া এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার জীবিত উদ্ধার করে নিয়ে আসে কক্সবাজারে। তাকে উদ্ধারের বিষয়টি প্রচার হলে জেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সকলের মধ্যে প্রশ্ন জাগে, সেদিনের লাশটি কার? আবদুল খালেক না হয়েও কেন শনাক্ত করে দাফন করা হয়েছে? কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। কথিত মৃত ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধারকারী কর্মকর্তা ওসি মানস বড়ুয়া বলেন, খালেককে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। দাফন করা যুবকটি টেকনাফ এলাকার জনৈক সাইফুলের বলে দাবি উঠেছে। ধাঁধাঁ কাটাতে কাজ করছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার জানান, দাফন করা খালেক যেহেতু জীবিত ফিরে এসেছে, তাকে আদালতে সোপর্দ করে আদালতের সিদ্ধান্ত মতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।