ঝুঁকিপূর্ণ ভাটায় অনিয়মের মহোৎসব
তবিুর রহমান: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্যাংদহা ও গাভার মধ্যবর্তী স্থানে রকি ভাটা ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জনবসতির ১০০ মিটারের ভিতরে কৃষি জমিতে ভাটা নির্মাণ, ফাটল ধরা চিমনি, ইটের সরকার নির্ধারিত মাপ থেকে কম, জ্বালানী হিসেবে কাঠের ব্যবহার করা হয় এই ভাটাতে।ভাটাটির অবস্থান একবারেই লোকালয়ের ১০০ মিটারের ভিতরেই। যার প্রভাব পড়ছে এলাকার পরিবেশ এবং প্রতিবেশের উপর। ভাটাটি একটি কৃষি জমিতে স্থাপিত। ভাটায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে টপ সয়েল। গ্রামীন সড়ক থেকে এক কিলোমিটার দূরে ভাটা স্থাপন ও গ্রামীন সড়ক ব্যবহার নিষিদ্ধি থাকলেও ভাটায় মালামাল পরিবহণের জন্য দেদারছে ব্যবহৃত হচ্ছে গ্রামীন সড়ক। আবার ফসল ফলাতেও বিপদে পড়ছেন কৃষকরা। ভাটার আশে পাশের জমিতে কোন ফল-ফলাদি ভাল হয় না।ভাটার বয়স ১০ বৎসরের অধিক হওয়ায় চিমনির বহিরাবর বা বাইরের পলেস্তরা খসে চিমনিতে অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে। ভাটার চিমনিতে একটি ৩০ ফুট, একটি ১৩ ফুট ও ২ থেকে ৩ টি বেশ বড় ফাটল ধরেছে। যে গুলো ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি চওড়া। আবার চিমনির চূড়া প্রায় ৯২ ডিগ্রী হেলে আছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। ঘটতে পারে প্রাণহানী।এদিকে সরকার নির্ধারিত মাপ ছাড়া ভাটায় ছোট ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মাপ ছাড়া দৈঘ্য, প্রস্থ্য ও উচ্চতায় দেড় থেকে তিন সেন্টিমিটার ছোট ইট প্রস্তুত করা হয়। হিসাব করে দেখা যায় যে পরিমাণ মাটি দ্বারা ১০টি ইট প্রস্তুত করা হয়, সেই একই পরিমাণ মাটি দ্বারা প্রস্তুত করার হচ্ছে প্রায় ১৩টি ইট। ফলে ক্রেতা ঠকিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ বিষয়ে ভাটাটির অফিসে কথা বলতে গেলে অফিস কর্মকর্তারা অফিসে রক্ষিত ইটের স্যাম্পল দিয়ে বলেন, আপনারা এই ইট গুলো মেপে দেখেন। অফিসের ইটের মাপ নিয়ে প্রত্যেকটি ইট সঠিক মাপে পাওয়া যায়। কিন্তু ভাটায় উৎপাদিত সকল ইট ছোট এবং প্রত্যেকটি বিভিন্ন মাপে। ভাটায় জ্বালানী হিসেবে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থ ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও এখানে ব্যবহৃত হচ্ছে বাশের মোথা, গুল কাঠ ও বিভিন্ন ফলদ কাঠ। ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, হুমকির সম্মুখীন বিভিন্ন ধরনে বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ। এ বিষয়ে ভাটার মালিক আব্দুল জব্বারের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ভাটাই লোকালয়ের ভিতরে এবং গ্রামীণ সড়কের পাশে। আমার দোষ কী? চিমনিতে ওটা ফাটল না। পলেস্তরা খসে পড়ে এমন লাগছে। এই চিমনি এখনও ১৫ বছরের অধিক চলবে। ইটের মাপে কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাটি ভেদে ইটের মাপ কমবেশি হয়ে থাকে। অফিসের ইটের মাপ সঠিক কেন? এই প্রশ্নের কোন সদুত্তোর তিনি দিতে পারেননি। কয়লার বদলে গাছ পোড়ানর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়লার দাম বেশি, আর গাছ সহজলভ্য হওয়ায় গাছ ব্যবহার করা হয়। আর প্রত্যেক ভাটাতেই তো গাছ পোড়ান হয়।
: