“অপরাধ সোর্স শহীদের পেশা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো নেশা”


বনানী থানা পুলিশের কথিত সোর্স অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী শহীদ ওরফে ফর্মা শহীদের শেল্টারে তার ভাগীনা রিদয়, ইয়াসিন তাদের দল নিয়ে ঢাকা উওর সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের বাসা বাড়িতে চুরিসহ মোটরসাইকেল চুরির সাথে জড়িত। সোর্স শহীদ চুরির মালামাল কেনাবেচা করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মহাখালী টিএন্ডটি মাঠের পাশে গোডাউন বস্তিতে শহীদের ঘরে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিল, বিয়ার ও মদের জমজমাট ব্যবসা চলছে। অভিযোগ আছে, তার ঘরে প্রতিদিন জুয়া খেলা চলে। এসময় পুলিশের চক্ষে ধুলি দিতে সোর্স শহীদের ঘরের বাইরে রাস্তায় তাক করে সিসি ক্যামেরা লাগানো। ঘরে বসে বাইরের চিএ দেখা যায়। ক্যামেরায় বিপদ দেখলেই শহীদ পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।অনুসন্ধানে জানা গেছে, বনানী থানা পুলিশের কথিত সোর্স শহীদকে ২০০৫ সালে বিস্ফোরক ও অবৈধ অস্ত্রসহ বনানী ২ নম্বর রোড এর হিন্দুপাড়ার বস্তি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই শহীদ পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতে থাকেন। প্রথমে গুলশান থানায় বর্তমানে বনানী থানায়। পুলিশের সাথে সম্পর্কের সুবাদে দিনদিন তার অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলেছে। মহাখালীর বাসিন্দা বারেক জানান, এলাকার অনেক চিন্হিত সন্ত্রাসীর সাথে শহীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। গোপনে যোগাযোগ রয়েছে। এক সন্ত্রাসীর সাথে আরেক সন্ত্রাসীর সেটিং করার পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের প্রস্তাব নিয়েও কথা বলে শহীদ। এছাড়া তাদের কাছে প্রয়োজন অনুযায়ী নিজ হাতে ককটেল বোমা বানিয়ে বিক্রি করে। জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসীদের সাথে শহীদের ঘনিষ্ঠতা তাদের পুলিশ ধরতে গেলে তার আগেই ফোন করে জানিয়ে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করে শহীদ। আবার পুলিশের কাছে নিজের অবস্থান টিকেয়ে রাখতে নিজেই সাথে গিয়ে সন্ত্রাসীর বাড়ী চিনিয়ে দেয়।বনানী ২নং রোডের বাসিন্দা হাজী সেলিম অভিযোগ করেন, কয়েকদিন আগে এলাকার লেকের ভেতরে শহীদসহ পুলিশ পরিচয়ে আরো দু’জনকে সাথে নিয়ে রনি ও সাব্বির নামক দুই যুবকের মোবাইল ছিনতাই করে। অথচ পুলিশের কথা শহীদ পালাতক। এবিষয়ে বনানী থানার এসআই মালেক বলেন, শহীদ পালাতক, আমরা তাকে খুজছি।জানা যায়, সোর্স শহীদ এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও নিরীহ লোককে গ্রেফতার করানোর ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করছে। তার চাহিদা মতে চাঁদা না দিলে পুলিশকে মিথ্যা তথ্যদিয়ে গ্রেফতার করিয়ে রিমান্ডে আনার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পুলিশের কতিপয় অর্থলোভী কর্মকর্তারা বানিজ্য করার জন্য অথবা পয়েন্ট বাড়িয়ে প্রমোশন পেতে সোর্স শহীদের কথা মতে অনেক সময় যাকে তাকেই গ্রেফতার করে মামলা দিচ্ছে। এদিকে সোর্স শহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সাথে থাকাকালীন কোনো মাদক স্পর্টে অভিযান চালিয়ে উদ্ধারকৃত মাদকের একটি অংশ নিজের হেফাজতে রেখে দিয়ে তার শেল্টারে থাকা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বেঁচে দেয়ার। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বনানী ২ নম্বর রোডের সরকারী ঝিলের বেশ কিছু অংশে মাটি ভরাট করে দখল করে সোর্স শহীদ ঘর তুলেছে। প্রথমে নিজে থাকতে পরবর্তীতে রাতের আধারে মাটি ভরে দখল করে একে একে প্রায় ১৫টি দোকান ও ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছে। বনানী গোডাউন বস্তির সফিক জানান, শহীদ অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায় বলে বস্তির মানুষ তাকে ভয় পায়। এছাড়া তাকে কিছু বললে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে মিথ্যা মামলা দেয়। জানা গেছে, বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু মামলা থাকা সত্বেও শহীদ পুলিশের সাথে ঘুরে বেড়ায়। শুধু তাই নয় বুুক ফুলিয়ে মাদক ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছে। ২০নং ওয়ার্ডের মাদক ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে ইয়াবা ও ফেন্সিডিল না কিনলেই পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করায়। তার কাছ থেকে মাদক দ্রব্য কিনা এবং না কিনা নিয়ে বহু মাদক বিক্রেতার সাথে শহীদের বিভেদ লেগে রয়েছে।অনুসন্ধানে জানা যায়, বনানী গোডাউন বস্তির ময়নার মা ও মফিজের গাজার স্পট এবং সোর্স হারুনের ইয়াবা স্পট, চেয়ারমেনবাড়ি পিচ্ছি জাকিরের ফেন্সিডিল স্পট, মহাখালী প্রানী সম্পদ গবেষনা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন নাটা ইউসুফের ইয়াবা স্পট, মহাখালী স্কুল রোড হক কাঁচা বাজার সংলগ্ন মানিকের ইয়াবা স্পট, ওয়ারলেস গেট জেরিন টেইলার্স সংলগ্ন বুলুর ড্রাইভার কাশেম ওরফে বাবা কাশেমের ইয়াবা স্পট, আরশাদ নগর বস্তির ইয়াসিনের ইয়াবা স্পট, তিতুমীর কলেজ সংলগ্ন হাজাড়িবাড়ী জামাই মালেকের ইয়াবা স্পট। এসব স্পটে মাদকের মূল জোগান দেয়াসহ বনানী থানা পুলিশের গোপন খবর আদান-প্রদান করে মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা করে সোর্স শহীদ। পুলিশের সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে মাঝে মাঝে স্পট থেকে শহীদ মাদক সেবকদের ধরিয়ে মামলা দেয়। তরুন প্রজন্ম ও যুব সমাজকে মাদকের মরন ফাঁদ থেকে রক্ষা করতে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা জরুরী বলে মনে করেন এলাকায় বসবাসকারী সাধারন মানুষ।অভিযোগ আছে, মাদক ব্যবসায়ী যারা শহীদকে চাঁদা দেয় তারা মাদক ব্যবসা করে পুলিশের জামেলাবিহীন। বলির পাঠা হতে হয় নিরিহ মানুষকে নয়তো মাদক সেবীকে। প্রায়ই আসামী ধরানোর জন্যে থানা থেকে পুলিশ যখন শহীদকে প্রেসার দেয় তখন নিরিহ লোকদের নাটকীয়ভাবে পকেটে চেক করার উছিলায় হাত ধুকিয়ে নিজের হাতেই থাকা ইয়াবা বের করে ফাসিয়ে দেয়। জানা যায়, শহীদ পুলিশের হেন্ডকাফ ও পুলিশ লেখা মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। অনেকে তাকে পুলিশই মনে করে। ভুল ও নিরিহ মানুষ ধরিয়ে চাঁদা আদায় করতে না পারলে মিথ্যা মামলা দেয়া এখন শহীদের নেশায় পরিনত হয়েছে।নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক বনানী থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সোর্স শহীদ তো মাঝে মাঝে নিজেকে পুলিশই মনে করে, পারলে যেন আকাশে উড়ে। স্থানীয়দের মতে, শহীদের কর্মকান্ড দিনদিন ভয়ংকর হচ্ছে। যাতে লাগামটানা প্রয়োজন মনে করছেন তারা। তার অপরাধ তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভুগীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *