নওগাঁ হাসাপাতাল সমাচার; তত্বাবধায়ক ও আরএমও’র দৌরাত্ম চরমে


নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ হাসপাতালে বর্তমান তত্বাবধায়ক ও আবাসিক চিকিৎসকের স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনিয়মের দৌরাত্ম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর ফলে সাধারন মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাশাপাশি নান হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নওগাঁ সদর হাসপাতাল নামেই আধুনিক। কোন কোন বিভাগে আধুনিক যন্ত্রপাতিও রয়েছে। কিন্তু সেগুলো ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর হাসপাতাল থেকে রোগীদের কৌশলে দালালদের মাধ্যমে নিজেদের ক্লিনিকে বা চেম্বারে ভাগিয়ে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। চিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়ায় রোগীরা বাধ্য হয়ে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত ক্লিনিকে এবং চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা সেব গ্রহন করছেন। কিছুদিন পূর্বে নওগাঁ হাসপাতালে ডাক্তারদের নিয়োগ দেয়া রোগী ধরা দালালদের সাবল দেয়া হয়েছে। অনেক পুরাতন যেসব দালাল তাদের সাথে ডাক্তারদের আর পোষাচ্ছে না। তারা এই লাইনে অতি দক্ষ হয়ে উঠেছে। তাই ডাক্তাররা তাদের সাথে পেরে উঠছেন না। ফলে নতুন দালালদের অলিখিত নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কারন অপরিপক্কদের যেমন খুশি তেমন ভাবে ব্যবহার করা যাবে আর যেমন খুশি তেমন কমিশনও দেয়া যাবে। এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আরএমও এমনকি চকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ এবং স্বাচিবও জড়িত রয়েছে। এ দু’টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসব চিকিৎসক ও ক্লিনিকগুলো থেকে নিয়মিত মাসোহারা গ্রহন করে থাকেন। যার ফলে চিকিৎসা সেবা সাধারন মানুষের প্রাপ্য অধিকার তা নিশ্চিত না করে ঐসব চিকিৎসকদের আর ক্লিনিক মালিকদের পক্ষে সাফাই গেয়ে থাকেন। বিভিন্ন সময় জনগনের পক্ষে না থেকে তারা ঐসব ডাক্তার এবং অবৈধ ক্লিনিকগুলোর পক্ষ অবলম্বন করে থাকেন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মুনির আলী আকন্দের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের বেশ কিছু কর্মচারী অভিযোগ করেছেন প্রয়োজনে ঐ হাসপাতালের নার্স এবং অন্য ষ্টাফরা তাঁ কাছে গেলে নানাভাবে হয়রানী করে থাকেন। ছুটি চাইলে নার্স এবং অন্য ষ্টাফদের সরাসরি পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে পকেটে টাকা থাকে তা বের করে নেন। অর্থের বিনিময় ছাড়া কাউকে ছুটিসহ কোনরকম প্রাপ্য সুবিধা দিতে রাজী নয় তিনি। তাঁর এই আচরনে হাসপাতালের ষ্টাফরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে সকাল ১০টার পর থেকে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা হাসপাতালে ভীড় জমাতে থাকেন। প্রতিদিন কমপক্ষে শতাধিক এরকম প্রতিনিধি একের পর এক হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তারদের কক্ষে প্রবেশ করতে থাকে। তাদের কোম্পানীর প্রোডাকশন ঔষধের নমুনা প্রদর্শন করতে থাকে। তাদের স্যাম্পল হিসেবে কোম্পানীর প্রোডাকশন ডাক্তারদের সৌজন্য হিসেবে প্রদান করে তাকেন। কথিত আছে স্যাম্পল হিসেবে প্রাপ্ত ঔষধ বিক্রি করে অনেক ডাক্তার লাখ লাখ টাকা আয় করে থাকেন। ঐসব প্রতিনিধিরা কেবলমাত্র ডাক্তারদের সাথে দেখা করেই ক্ষান্ত হয় না। ডাক্তাররা রোগীদের প্রেসক্রিপশনে কি ঔষধ লিখেছে তা জোরপূর্বক টেনে হিঁচরে নিয়ে দেখতে থাকে। এমন কি মোকবাইল ফোনে সেগুলোর ছবি পর্যন্ত উঠিয়ে নেয়। এতে হাসপাতালে প্রতি নিয়ত বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে রোগীদের। এরও কোন সঠিক পদক্ষেপ হাসপাতাল কর্ত্তৃপক্ষ নিচ্ছেন না। নওগাঁ জেলার একমাত্র আধুনিক হাসপাতালটি চিকিৎসা বান্ধব গড়ে তোলা এবং রোগিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গৃহিত হবে নওগাঁবাসীর এই প্রত্যাশা।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *