সুন্দরবনে ১৭৮ বাওয়ালী উদ্ধার : অস্ত্র,গুলিসহ পুশচিংড়ি ও ফাইসা পোনা জব্দ


মনির হোসেন, মংলা: মংলা কোস্টগার্ড বাহিনী পশ্চিম জোনের অপারেশন টিমের সদস্যরা গত কয়েকদিনে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা সমূহে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে বনদস্যু বাহিনীর হাতে জিন্মি থাকা ১৭৮ জন বাওয়ালী, ৫৭ টি নৌকা, ১ টি চাইনিজ পিস্তল ১ রাউন্ড গুলি,৭০ লাখ টাকা মূল্যের ৩০ লাখ পিচ ফাইসা পোনা, ১২শ কেজি পুশকৃত চিংড়ি ও ১০ কেজি জেলী জব্দ করার পাশাপাশি দুই প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মংলা কোস্টগার্ড বাহিনী পশ্চিম জোনের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সাক্ষরিত পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়,গত ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনার রুপসা বাজার সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত রিয়াদ ফিস ও ভাই ভাই ফিসে অভিযান চালিয়ে ১২শ’ কেজি পুশকৃত চিংড়ি ও ১০ কেজি জেলী জব্দ করেছে কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা। বিদেশে রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার অপরাধে এ দুটি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই দিনে রাত সাড়ে ৮ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খুলনার রুপসা ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি চাইনিজ পিস্তল (৭.৬২ মি.মি) ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা কাউকে আটক করতে পারেনি। অন্যদিকে গত ২ এপ্রিল দুপুরে সুন্দরবনের টেপার ভাড়ানী খাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত বনদস্যু মোশারফ বাহিনীর হাতে জিন্মি থাকা ১৭৮ জন বাওয়ালী ও ৫৫ টি নৌকা উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা। বনদস্যু মোশারফ বাহিনী মুক্তিপণের দাবিতে বাওয়ালী ও তাদের নৌকা আটকে রেখেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালায় কোস্টগার্ড। বনদস্যু বাহিনীর সদস্যরা কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়লে কোস্টগার্ড সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলিবিনিয়ের এক পর্যায়ে দস্যুরা বনের গহীনে পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে ১৭৮ জন জেলে ও ৫৫ টি নৌকা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের সুন্দরবনের আদাচাই ফরেষ্ট অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে গত ৩১ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুন্দরবনের কালাবগী খাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭০ লাখ টাকা মূল্যের ৩০ লাখ পিচ ফাইসা পোনা ও ২ টি ইন্জিন চালিত নৌকাসহ ৯ জেলেকে আটক করে কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা। আটককৃতদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। উদ্ধারকৃত ফাইসা পোনা দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে নদীতে অবমুক্ত করা হয়। জানতে চাইলে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বাহিনীর মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল এ এম এম আওরঙ্গজের চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাসমূহে জলদস্যু, বনদস্যু, চোরা শিকারী,পাচারকারী ও বণ্যপ্রাণী নিধনকারীদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড বাহিনী নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাবে। তিনি আরো জানান, কোস্টগার্ড বাহিনীর এখতিয়ার ভূক্ত এলাকা সমূহে আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রন,অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধেও নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাবে কোস্টগার্ড বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *