উজির আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্দেশে ময়লা ফেলতে দুই ডিব্বা নিয়ে ডাষ্টবিনে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া এক শিশু

ঝিনাইদহ সংবাদাতা: দুই হাতে দুইটি ময়লার ডিব্বা নিয়ে ছুটেছে শিশু সিয়াম শেখ (৯)। শিক্ষকদের নির্দেশে ডিব্বার ময়লা ফেলতে হবে ডাষ্টবিনে। স্কুলের অফিস রুম থেকে প্রায় ২ শত গজ দুরে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের পাশে আছে সেই ডাষ্টবিন। কষ্ট করে সেই পর্যন্ত এসে ময়লা ফেলছে শিশুটি। প্রশ্ন করতেই বললো ম্যাডামরা তাকে পাঠিয়েছেন। মাঝে মধ্যেই তাকে আসতে হয়, অন্যরাও আসে। অভিভাবকরা বলছেন, তারা বাচ্চা পাঠান পড়ালেখা করতে, সেখানে ময়লা ফেলতে নয়। শিক্ষকরা স্কুল ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখার জন্য ছাত্রদের ব্যবহার করে থাকেন, কিন্তু ডাষ্টবিনে ময়লা পেলতে পাঠাতে পারেন না। নিশ্চয় ওই শিক্ষকরা তার নিজের বাচ্চাটি দিয়ে এই জাতীয় কাজ করাবেন না। আর শিক্ষা কর্মকর্তাদের বক্তব্য এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। বিষয়টি দেখা হবে। ঝিনাইদহ শহরের মাঝে অবস্থিত উজির আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ৮৬ নম্বর এই বিদ্যালয়ে ২৯০ জন শিশু পড়ালেখা করে। শিক্ষক আছে ১১ জন। একজন আছেন পিওন কাম নৈশ্য প্রহরী। এই বিদ্যালয়ের মাঠ পেরিয়ে একটি গেট রয়েছে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়ক ঘেষে। আর মহাসড়কের ধারে রয়েছে পৌরসভার নির্মিত ডাষ্টবিন। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে সেই ডাষ্টবিনে ময়লা ফেলতে দেখা যায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র শিশু সিয়াম শেখকে। তুমি এখানে কি করো, কাছে গিয়ে প্রশ্ন করতেই শিশুটি জানায় সে ময়লা ফেলতে এসেছে। বিদ্যালয়ের ম্যাডামরা তাকে পাঠিয়েছে। বিদ্যালয়ের নানা ময়লা রাখা ছিল দুইটি বড় ডিব্বায়। যা তাকে দিয়ে পাঠানো হয়েছে। শিশুটি জানায়, সে দুই হাতে ভর দিয়ে ডিব্বা দুইটি এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। এখন ময়লা ঢেলে দিচ্ছে। ডিবক্ষার মধ্য থেকে কিছু ময়লা বের হতে না চাইলে সে হাত দিয়ে বের করার চেষ্টা করছে। ময়লা থেকে গেলে শিক্ষকরা কিছু বলতে পারেন। শিশুটিকে প্রশ্ন করা হলে সে জানায়, মাঝে মধ্যে তাকে আসতে হয়, আবার অন্যদের দিয়েও পাঠানো হয়। এ বিষয়ে এক অভিভাবক নাম প্রকাশ না করে জানান, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে শিশুদের আসলে কি শেখান এই ঘটনা তার প্রমান। তিনি বলেন, এটা শিশু শ্রমের আওতায় পড়ে। যা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি জানার পর শিশু সিয়ামকে ডেকেছিলেন। শিশু বলেছে সে নিজেই ইচ্ছায় শখ করে ডাষ্টবিনে ময়লা ফেলতে গিয়েছিল। তিনি বিদ্যালয়ে কর্মরত অন্য শিক্ষকদের কাছেও জানতে চেয়েছেন, তারা কেউ পাঠাননি বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব পিওনের। তবে বাচ্চাদেরও অংশ গ্রহন করানো যাবে। তবে ডাষ্টবিনে ময়ল ফেলতে তারা কাউকে পাঠান না বলে দাবি করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মদ জানান, শিশুদের দিয়ে এ জাতীয় কাজ করানো মারাত্বক অন্যায়। তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *