সান্তাহারে বাফার গুদামে খোলা আকাশের নিচে ২০ হাজার টন ইউরিয়া নষ্ট হচ্ছে সার


আদমদীঘি প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার বিসিআইসির বাফার গুদামের অব্যবস্থাপনা, মজুত ও বিতরনে অনিয়মের কারনে দীর্ঘ সময় ধরে খোলা আকাশের নিচে প্রায় ২০ হাজার টন ইউরিয়া সার পড়ে থাকায় জমাট বেঁধে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কর্মকর্তারা ‘ফাষ্ট ইন ফাষ্ট আউট মেথড’ মানছে না বলেই প্রায় পাঁচ বছর ধরে খোলা আকাশের নিয়ে সারগুলো রাখায় রোদ-বৃষ্টিতে সার গুলো ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের ফসলের জমি ও জলাশয়ে। এতে করে জমির ফসল, পুকুরের পানি ও মাছের ক্ষতি সহ দুর্গেন্ধে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের সার ব্যবহারের ট্রানজিট গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হতো বগুড়ার সান্তাহার বিসিআইসি বাফার গুদামটি। সার মজুদের নতুন নতুন গুদাম বিভিন্ন জেলায় গড়ে ওঠায় এটি আর ট্রানজিট গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। তবে আপৎকালীন মজুত থাকে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার শহরের পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার আট উপজেলায় নিবন্ধিত ৯৩ জন ডিলারের মাধ্যমে কৃষকের মাঝে এখান থেকেই ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয়। এদিকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে খোকা আকাশের নিয়ে বিপুল পরিমান সার পড়ে থাকায় রোদ-বৃষ্ঠিতে নষ্ট সহ আশপাশের ফসলি জমি ও জলাশয়ে ছড়িয়ে যাওয়াতে ক্ষতি হচ্ছে কৃষক ও মাছ চাষীদের। পুরনো জমাট বাঁধা এসব ইউরিয়া সার বিক্রি করতে না পারায় সার গ্রহনে অনাগ্রহ প্রকাশ করে ২০১৭ সালের শেষের দিকে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ডিলাররা। ডিলারদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গুদামের মজুদ পরিস্থিতি জানতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, বগুড়ার সান্তাহার গুদামে কাফকো থেকে ৭২৪.৬১,শাহজালাল থেকে ৭৪৮.১৬ ও আমদানিকৃত ৩০ হাজার ২২০.৬৪টন সার মজুদ আছে। এর মধ্যে ১০হাজার ৯৪৫.০৫ টন সার ১৮ গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নিচে পলেথিন ও ত্রিপল দিয়ে আবৃত করে রাখা হয়েছে। এ সব সার রোদ-বৃষ্টিতে জমাট বেঁধে শীলা খন্ডে পরিনত হয়েছে। এছাড়া একই অবস্থা গুদামের ভেতরে রাখা প্রায় আট হাজার টন ইউরিয়া সারের। এ ব্যাপারে সান্তাহার বাফার গুদাম ইনর্চাজ আব্দুল মালেক জানান, সান্তাহার গুদামের ধারণ ক্ষমতা ১৬ হাজার টন। বর্তমানে মজুদ আছে ২৮ হাজার টন। ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত থাকায় অধিকাংশ সার বাইরে খামাল দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে সার মজুদ ও বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *