পুলিশ-প্রশাসনের নিরবতায় রাণীনগরের রাস্তা গুলোতে বে-পরোয়া ট্রাক্টর \ প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা
একেএম কামাল উদ্দিন টগর,নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরের বিভিন্ন রাস্তায় বে-পরোয়া ভাবে চলছে শতাধীক ট্রাক্ট্রর । অদক্ষ,কিশোর,বালকের হাতে ট্রাক্ট্ররের ষ্টিয়ারিং থাকায় এবং বে-পরোয়া গতিতে চালানোর কারণে এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রানহানীর মতো দূর্ঘটনা। নিয়মিত এসব দূর্ঘটনা ঘটলেও পুলিশ-প্রশাসনের রহস্যজনক নিরবতায় আরো বে-পরোয়া হয়ে উঠেছে এসব ট্রাক্ট্রর।সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাণীনগর-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কসহ উপজেলার অভ্যন্তরীন সড়কে দিন রাত ২৪ ঘন্টা অবাধে দাপিয়ে চলছে শতাধিক ট্রাক্টর। চলতি ইট কাটার মৌসুমে কৃষি জমি হতে মাটি কেটে সড়ক পথে বিভিন্ন ইট ভাটায় চুক্তি ভিত্তিক মাটি পৌছে দেওয়ার জন্য অবিরাম চলছে এসব ট্রাক্ট্রর। এছাড়াও ট্রাক্ট্ররগুলোর রাস্তায় পরিবহনের অনুমতি পত্র না থাকলেও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ট্রাক্ট্ররে কখনো ধান কখনো খড়ি ,কখনো ইট আবার কখনো বালু পরিবহন করছে । তবে এর মধ্যে বিভিন্ন ইট ভাটায় মাটি কেটে বহন করার কাজে রয়েছে অধিক সংখ্যক ট্রাক্ট্রর। এতে করে রাস্তায় এক দিকে যেমন তিব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে অন্য দিকে প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণহানীসহ ছোট-বড় দূর্ঘটনা। পাশা-পাশি ট্রাক্ট্ররে করে মাটি বহনের কারনে রাস্তায় মাটি পরে থাকায় মটরসাইকেল আরোহিসহ বিভিন্ন পরিবহনেও ঘটছে দূর্ঘটনা । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কাঁচা-পাকা সড়ক । সদরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় নিয়মিত শিশু-কিশোররা স্কুলে যাতায়াত করতে অভিভাবকরা সব সময় থাকেন দূর্ঘটনার আতংকে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ভ্যান চালক হেলপাররাই ট্রাক্টর মালিকদের ভরসা। ট্রাক্ট্রর চালকদের পেশাগত কোন প্রশিক্ষণ না থাকলেও পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে একদিকে যেমন ঘটছে প্রানহানীর মতো দূর্ঘটনা অন্য দিকে বিকট শব্দে শব্দ দূষর্ণের কারণে শিশুদেরকে নিয়ে সড়কে হাটা-চলা করতে মারাতœক ভাবে অসুবিধায় পরতে হয়। সম্প্রতি উপজেলার দূর্গাপুর নামক স্থানে কিশোর চালকের ইচ্ছে মত বেপরোয়া গতিতে ট্রাক্টর চালানোর সময় পিছন দিক থেকে মটরসাইকেলকে সজোরে ধাক্কা দিলে মটরসাইকেল আরোহী স্বামী-স্ত্রী দুই জনেই পাকা সড়কে ছিটকে পরে যায় । এতে ট্রাক্টর চালক গাড়ি নিয়ন্ত্রনে না নিয়ে আরো বেপরোয়া গতিতে ট্রাক্টর চালিয়ে গৃহবধুর মাথার উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই ফেরদৌসি (২৮) নামের ওই গৃহবধু মারা যায়। এছাড়া ট্রাক্ট্ররে করে মাটি বহনের সময় চাকায় পৃষ্ট হয়ে আবাদপুকুর এলাকায় আতিকুল ইসলাম (১৩) নামের এক কিশোর মারা যায়। কিছুদিন আগেই রাণীনগর-আত্রাই সড়ক মেরামত এর কাজ সম্পূর্ণ করা হলেও অতিরিক্ত মাটি বোঝায় ট্রাক্টর চলাচলের কারনে এই সড়কটি আবারও চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পিছু ছাড়ছে না রাণীনগরের শাখা সড়কের যানজট আর ছোট-খাটো দূর্ঘটনা। এলাকার সাধারণ লোকজন বলছেন, রাণীনগর থানাপুলিশ প্রতিদিনই তলাøশির কালে চেকপোষ্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের বৈধ কাগজপত্র না থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও আতংকিত অবৈধ ট্রাক্টর চালক ও মালিকদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে তাদেরকে কিছুই বলা হয় না। এমনকি পুলিশের অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযানের ছোঁয়া ট্রাক্টর চালক-মালিকদের কাছে পৌছায় না। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোষ্ট বসিয়ে শুধুমাত্র মটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রেও পুলিশের বিরুদ্ধে রয়েছে মটরসাইকেল চালকদের নানা হয়রানির অভিযোগ। ট্রাক্টর মালিক দুলাল হোসেন জানান, আমাদের মালিক সমিতিতে ৭০ টির মত ট্রাক্টর রয়েছে। অধিকাংশ ট্রাক্টরই মাটি বহনের সাথে সংপৃত্ব। উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান হাসান জানান, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে আত্রাই-রাণীনগর সড়কের ব্যাপক ক্ষতিসহ ছোট-বড় দূর্ঘটনা, অসহনীয় যানজটে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই অবৈধ যানবাহন বন্ধের জন্য উপজেলা আইন-শৃংখলা সভায় কয়েকবার আলোচনা হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। জন স্বার্থেই এই ধরণের অবৈধ যানবাহন বন্ধ করা উচিত।রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, ট্রাক্টর গুলো অবাধ চলাচলের কারণে সদরে এক দিকে যেমন সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের অন্য দিকে ছোট-খাটো দূর্ঘটনা লেগেই আছে। শীঘ্রই অবৈধ এই যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে।