আদমদীঘিতে শহীদ মিনার নেই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
আদমদীঘি প্রতিনিধি: ভাষার মাস ফ্রেবুয়ারী। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো বগুড়ার আদমদীঘিতে মহান শহীদ দিবস ও আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে। এ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারীভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি ও বে-সরকারীভাবে বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। মফস্বলের কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ভাবে নিজ শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু বাস্তবতা হলো সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও আদমদীঘি উপজেলায় বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই। ফলে মফস্বলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীরা বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।
আদমদীঘি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলায় সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে কলেজ রয়েছে ৭টি, হাইস্কুল রয়েছে ৩০টি, কারিগরী কলেজ রয়েছে ২টি, স্কুল এ্যন্ড কলেজ রয়েছে ১টি, মাদ্রাসা রয়েছে ১৪টি এবং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৯৮ টি, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩০ টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ১৩ টি, কলেজ পর্যায়ে মাত্র ৯ টি মধ্যে ৩টি কলেজে শহীদ মিনার আছে। আদমদীঘি উপজেলায় কোন মাদ্রাসাতে শহীদ মিনার নেই। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকের সই করা ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারীর এক দাপ্তরিক আদেশে বলা হয়েছে, দেশের যেসব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলিতে অতি দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণ করতে হবে। এ ছাড়া যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, সেগুলো যথাসম্ভব দ্রুত সংস্কার করার অনুরোধ করা হচ্ছে।এ বিষয়ে কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা জানান, তারা সরকারী কোন নির্দেশ না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠান চত্বরে শহীদ মিনার নির্মান করেন নি। আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানান, প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তারা শহীদ মিনার নির্মান করতে পারেনি। এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল হামিদ, আদমদীঘি রহিম উদ্দীন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, আদমদীঘি কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিষ) এর সাধারন সম্পাদক ও রবিউল ইসলাম রবীন, মুত্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক এমপি ও ভাষা সৈনিক কছিম উদ্দীন আহম্মেদ, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জাহেদুল ইসলাম জানান, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ গঠনে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য শহীদ মিনার বাঙালি জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা। একুশের চেতনা নতুন প্রজ¤েœর মাঝে ছড়িয়ে দিতে শহীদ মিনারের বিকল্প নেই। স্থানীয় ভাবেই এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন বলে তারাঁ অভিমত ব্যক্ত করেন। নাম না প্রকাশ শর্তে মাধ্যমিক স্কুল সমিতির একজন নেতা জানান, শহীদ মিনার নির্মান বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগন এবং পরিচালনা পরিষদ তেমন জোড়ালো ভূমিকা রাখেন না। এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা চেয়ারম্যন আলহাজ্ব আব্দুল মহিত তালুকদার জানান, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। শহীদ মিনার নির্মান ব্যাপারে কোন বরাদ্দ নেই, তবে এবারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান বিষয়ে বরাদ্দ রাখবো। আশা করছি কয়েকটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মান করা হবে।