জামালপুরে সত্য গোপন করে আড়াই বছরের শিশুকে আসামী করায় বাদী জেল হাজতে
ওসমান হারুনী,জামালপুর প্রতিনিধি:জামালপুরে সত্য গোপন করে আড়াই বছরের শিশুকে আসামী করে মামলা করায় বাদীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। সোমবার দুপুরে জামালপুর চীফ জুডিশিয়াল প্রথম আদালতের বিজ্ঞ অতিরিক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহেদুজ্জামান এই আদেশ প্রদান করেন।শিশু আরিফের বৈমাত্রীয় ভাই ফজলুল হক জানান, তাদের ওয়ারিশ সূত্র ধরে জমি নিয়ে প্রতিবেশী আব্দুল হানিফের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে আব্দুল হানিফ ১৬ জানুয়ারি আমলী আদালত বকশীগঞ্জ, জামালপুরে একটি মামলা দায়ের করেন। সিআর মামলা নং- ১৬(১)/২০১৮। ওই মামলায় আড়াই বছরের ছোট ভাই আরিফসহ পরিবারের ৭ জনকে আসামী করা হয়।সোমবার ওই মামলায় আদালতে ছোট ভাই আরিফকে নিয়ে হাজির হলে বিজ্ঞ বিচারক আড়াই বছরের শিশু আরিফকে আসামী করায় বাদীকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সত্য গোপন আড়াই বছরের শিশুকে আসামী করে মামলা করার অভিযোগে চীফ জুডিশিয়াল আদালতের বিজ্ঞ অতিরিক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহেদুজ্জামান নিজে বাদী হয়ে দ:বি:’র ১৯৩ ধারায় মামলার বাদী আব্দুল হানিফের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সুলতান উদ্দিন বলেন জমি নিয়ে যে সিভিল মামলা হয় সেটাতে বাবার ওয়ারিশ হিসেবে ছেলেকে বিবাদী করা হয়। কিন্তু বাদী যে মামলাটি করেছেন সেটি একটি ক্রিমিনাল মামলা। এই মামলায় আড়াই বছরের শিশু কিভাবে আসামী হয় সেবিষয়ে কোন সুদোত্তর দিতে পারেননি ওই আইনজীবি। মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. টিটু কুমার সাহা বলেন, বাদী পক্ষের আইনজীবী আড়াই বছরের শিশুর বয়স গোপন করে মামলাটি দায়ের করেন। যা আইনের পরিপন্থী। এসময় মামলার ক্ষেত্রে সব আইজীবীকে সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। সরকার পক্ষের আইনজীবী পিপি নির্মল কান্তি ভদ্র এই প্রতিবেদককে বলেন, ৭ আসামীর মধ্যে ৬ জনের বয়স উল্লেখ করা হলেও আড়াই বছরের শিশু আরিফের বয়স গোপন করে তাকে আসামী করায় প্রতারণার সামিল। এছাড়া আদালতে অভিযোগটি আমলে নেয়ার সময় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আসামীর বয়স যখন নাই সেটি উল্লেখ করতে পারতেন। তা না করায় আজ এই বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিশুটি আদালতে হাজিরার সময় বিষয়টি বিজ্ঞ বিচারক বিষয়টি আমলে নেন এবং বাদির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠণ করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। বিজ্ঞ বিচারক বাদীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেয়ায় ভবিষ্যতে আর কোনো আইনজীবি বা মামলার বাদী এধরনের প্রতারনার কাজে লিপ্ত হবেন না।