আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহবান কাদেরের
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের দেয়া রায়ে উচ্ছ¡সিত না হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।বৃহস্পতিবার (৮ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়ে তিনি এ আহবান জানান।তিনি বলেন, ‘তারা(বিএনপি) আজকেই বাংলাদেশে অস্থিরতা অশান্তি সৃষ্টি করে-সব লণ্ডভণ্ড করে দে মা লুটে পুটে খাই অবস্থা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো। তারা ক্ষমতায় থাকলেও এই অবস্থা ক্ষমতার বাহিরে থাকলেও এই অবস্থা। সেই দূরভিসন্ধি সফল হবে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় আছে। আমাদের নেতা কর্মীরা সতর্ক অবস্থায় আছে। আগামী দিনগুলোতেও সতর্ক থেকে ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। রাজনৈতিকভাবে কোন প্রতিবাদ হলে আমরা রাজনৈতিকভাবে এর প্রতিবাদ করব। তারা যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাহলে এর জবাব পুলিশ দেবে। তাদের (পুলিশ) ভাল করে জানা আছে কিভাবে এদের জবাব দিতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীদের এই রায় নিয়ে মারামারি, মাতামতির কোনো প্রয়োজন নেই। ঠান্ডা মাথায় সতর্কভাবে রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করব। এই রায় আদালত দিয়েছে। এই রায়ের সাথে সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’কাদের বলেন, ‘বিষয়টি এমন যে সরকার এই রায় দিয়েছে? আদালতের উপর তাদের কোনো আস্থা নেই। আদালতের রায়ে আস্থা যদি না থাকে তাহলে আপিলে যাচ্ছেন কেন? এখনো সময় আছে। এটাই শেষ কথা না। এরপর হাইকোর্ট ডিভিশন, আপিল ডিভিশন এরপর রিভিউ আছে। এখনো তাদের তিনটি সুযোগ আছে।’মন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে তারা ধৈর্য্য ধরার কথা বলছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলছেন। অন্যদিকে রায় ঘোষণার দিনও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। কার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ? আগামী কাল তাদের সারাদেশে বিক্ষোভ। কার বিরুদ্ধে তাদের এই বিক্ষোভ? তার পরের দিন শনিবার বিক্ষোভ। কার বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ? আদালতের বিরুদ্ধে তাদের এই বিক্ষোভ।’তিনি বলেন, ‘যিনি দেশের আইনমন্ত্রী ছিলেন তিনি বলছেন- এই রায় নাকি সংবিধান বিরোধী। আদালতের রায়কেও তারা সংবিধান বিরোধী বলছে। এই দৃষ্টতাও তারা দেখাচ্ছে। আসলে তারা দেশে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। আজ তারা যে ভায়োলেন্স ঘটিয়েছে। আমাদের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সারাদেশে সতর্ক ছিল। যারা কারণে তাদের ফখরুল সাহেবদের দূরভিসন্ধি সফল হয়নি।’এ সময় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা এ নিয়ে গোটা দেশে সম্প্রতি গুঞ্জন ওঠে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। রায় ঘোষণার দিন এ পরিস্থিতি আরও চরমে পৌঁছে। এ নিয়ে উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটে।এদিকে বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করেন। এতে বিএনপির চেয়ারপারসনকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর পর কড়া নিরাপত্তায় খালেদা জিয়াকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।