আদমদীঘিতে স্কুল ছাত্রের হাত ভেঙে দিয়েছেন শিক্ষক
আদমদীঘি প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিদ্যাবীথি মডেল স্কুলের ৮ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র আরাফাত রহমান কে বেদম প্রহার করে হাত ভেঙে দিয়েছে ওই স্কুলের গনিত শিক্ষক মামুনুর রশিদ। ওই শিক্ষকের ভয়ে ঘটনার ১২ দিন পর বিষয়টি তাঁর বাবা-মা কে জানিয়েছে। ঘটনা ঘটেছে গত জানুয়ারী মাসের ২১ তারিখে। এ ধরনের ঘটনার পরও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। ওই ছাত্রের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আরাফাত মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। তাঁর লেখাপড়া ও বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আরাফাত রহমান আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের ছোট আখিড়া গ্রামের নুরে আলমের ছেলে।সরেজমিন আরাফতের বাড়িতে গিয়ে তার দেখা মেলে। ডান হাতে ব্যান্ডেস করা অবস্থায় সে বিছানায় শুয়ে ছিল। সংবাদকর্মী আসার খবরে সে বিছানা থেকে উঠে বসে। ঘটনার বিবরন দিতে গিয়ে সে আবেগভরা কন্ঠে জানায়, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে তাদের ক্লাসের কয়েকজন ছাত্র হট্রগোল করছিল। এ সময় গনিতের শিক্ষক মামুনুর রশিদ ক্লাসে প্রবেশ করে। এ সময় কোন কিছু বুঝে ওঠার আগে তিনি আমার হাত ধরে মোচর দেয়। এক পর্যায়ে বেধড়ক ভাবে ঘুষি মারতে থাকেন। তার এ ধরনের মারপিটে আমি মেঝেতে পড়ে যায়। এরপরও সে মারপিট অব্যাহত রাখেন। ঘটনার সময় আমাকে রক্ষার জন্য সহপাঠি নাদিম হোসেন এগিয়ে আসলে তিনি তাকেও প্রচুর মারপিট করে। এরপর শিক্ষক আমাকে বলে আমি যেন বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে কাউকে না বলি। ব্যাথা নিয়ে আমি বাড়িতে ফিরে আসি এবং মা বাবাকে বলি ক্লাসে বেঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছি। এভাবে ১২ দিন চলে যায়। কিন্তু আমার হাতের ব্যাথা বাড়তে থাকলে আমি ঘটনাটি ১২ দিন পর মাকে খুলে বলি। আরাফাতের বাবা নুরে আলম বলেন, ছেলের মুখে ঘটনার বিবরন শুনে গত মাসের ২৭ তারিখে তাকে বগুড়ায় চিকিৎসক নজিবুল্লাহ’র কাছে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক জানায় আপনার ছেলের হাত ভেঙে গেছে। পরে তিনি আরাফাতের হাত প্লাষ্টার করে চিকিৎসা দেন। বিষয়টি পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুলবুল ফারুককে জানালে তিনি বলেন ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু তিনি পরে কোন ব্যবস্থা নেননি এবং আরাফাতকে দেখতে পর্যন্ত আসেননি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মামুনুর রশিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ওকে সেভাবে আঘাত করতে চায় নি। হঠাৎ করে হাতে লেগে গেছে এ জন্য আমি দুঃখিত। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুল হোসেন জানান, ওই বিদ্যালয়টি বৈধ নয় এ কারনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদেকুর রহমান বলেন, বিষয় অত্যান্ত দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলেছি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বুলবুল ফারুক মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষককে মৌখিক ভাবে শাসন করেছি এবং ছাত্রের বাবাকে চিকিৎসা খরচ দিতে চেয়েছি। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে পাঠদানের অনুমতি নেই, তবে অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে।