সুজানগর ঐতিয্যবাহী স্টেডিয়াম মাঠ এখন গোচারণ ভূমিতে পরিণত ॥ মেরামতের জোড় দাবী
সুজানগর (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার সুজানগরের একমাত্র ঐতিয্যবাহী স্টেডিয়াম মাঠ এখন গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে স্টেডিয়ামটি দখলদাররে হাতে দখল চলেছে। সুজানগরের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব এ কে এম বন্দে আলী জানান আনুমানিক দেড়’শ বছর আগে উপজেলার তাঁতীবন্দ গ্রামের কৃতী সন্তান জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী এ জনপদের ক্রীড়ানুরাগী মানুষের খেলা-ধোলার জন্য সুজানগরের কাঁচারীপাড়ায় প্রায় ৮ বিঘা জমির উপর একটি খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠা করেন। সে সময় এলাকাবাসী ওই মাঠকে কাঁচারীপাড়া খেলার মাঠ হিসেবেই জানতেন এবং সেখানে নিয়মিত ফুটবল এবং ভলিবলসহ অন্যান্য খেলা-ধোলা করতেন। তবে সে সময় মাঠটিতে তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কিন্ত দীর্ঘ কয়েক যুগ পর ১৯৮২ সালে জাতীয় পার্টি সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাঠটিতে সীমানা প্রাচীর এবং ধারাভাষ্য ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। আর সেই থেকে এক সময়ের কাঁচারীপাড়া খেলার মাঠটি সুজানগর স্টেডিয়ামে পরিণত হয়। শুধু তাই না সে সময় সুজানগরে গঠন করা হয় জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার উপজেলা কমিটি। দীর্ঘদিন ওই কমিটির ব্যবস্থাপনায় স্টেডিয়ামটিতে সারা বছর চলতো ফুটবল, ভলিবল এবং হাডুডুসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আবদুল হাই জানান ওই সময় স্টেডিয়ামটিতে স্থানীয় পর্যায়ের খেলা-ধোলার পাশাপাশি আয়োজন করা হতো আন্ত: জেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট। সে সময় সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ওই সব খেলা উদ্বোধন করতে সুজানগরে আসতেন। দূর-দূরান্তের হাজার হাজার ক্রীড়ামোদী দর্শক তখন খেলা দেখার জন্য ছুটে আসতেন স্টেডিয়াম মাঠে। সব মিলিয়ে তখন স্টেডিয়ামটি ছিল জমজমাট খেলার আসর। কিন্তু ঐতিয্যবাহী ওই স্টেডিয়ামে এখন আর খেলা-ধোলা হয়না। বিশেষ করে নব্বই’র দশকের দিকে উপজেলা পর্যায়ে ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পর স্টেডিয়ামের সক্রিয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘদিন খেলা-ধোলা না থাকায় স্টেডিয়ামটি এখন এলাকার মানুষের গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সরকারিভাবে দেখভাল না করায় স্টেডিয়ামের আশপাশের বাড়ির লোকজন মাঠটিতে ইচ্ছামত গরু-ছাগল চড়ানোর পাশাপাশি কৃষিপণ্য ও গরুর গবর শুকানো কাজ করছে। এতে মাঠটি খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি এলাকার প্রভাবশালী লোকজন স্টেডিয়ামের জায়গা দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করায় স্টেডিয়ামটি বেহাত হতে চলেছে। এছাড়া সড়ক নির্মান, ব্লক নির্মানের মালামাল রাখা ও তৈরী কারায় স্টেডিয়াম মাঠের সড়ক সহ মাঠের বেহাল অবস্থা পরিনত হয়েছিলো, এলাকার ক্রীড়ামোদি যুবকরা স-উদ্যোগে ইতিমধ্যে মাঠ থেকে টুকরো পাথর, ইট পরিস্কার করে ট্রাকটার দিয়ে চাষ করে সমভূমিতে পরিনত করলেও অদৃশ্য কারণে তাদের আর ঐ মাঠে খেলার সুযোগ হয়নি। জানা যায় ঐ এলাকার কিছু অসাধু ব্যাক্তিদের ইন্ধনে ঠিকাদাররা তাদের কন্সটাকশনের মালামাল রাখার সুযোগ করে দেন। সেই সাথে রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে স্টেডিয়ামের ধারাভাষ্য ভবনও সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ বলেন স্টেডিয়ামটি রক্ষণা-বেক্ষণের পাশাপাশি সরকারের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় খেলা-ধোলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।