ছাতকে সরকারি বরাদ্ধের কোটি টাকা লুঠের অভিযোগে তোলপাড়
নাজমুল ইসলাম, ছাতক (সুনামগঞ্জ): ছাতকে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভূঁয়া বিল-ভাউচারে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একটি শক্তিশালি লুঠেরা সিন্ডিকেট এ দূর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে। বিষয়টি সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। জানা যায়, ১১জানুয়ারি উপজেলা মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় এ ভয়াবহ লুঠপাটের ঘটনায় বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদের তোপের মূখে পড়েন ইউএনও এবং পিআইও। এটি ধামাচাঁপা দিতে ১২জানুয়ারি রাতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে ইউএনও নিজ কার্যালয়ে সমোঝার বৈঠকে ৭জন ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত হন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত বৈঠক করেও তারা দূর্নীতির সহযোগিতা না করায় বিপাকে পড়েন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, ভূঁয়া প্রকল্প ও বিল-ভাউচারে ১৩টি ইউনিয়নে ইউএনও মুহাম্মদ নাসির উল্লাহ খানও পিআইও শহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সমন্বয় সভায় ইউপি চেয়ারম্যানরা দু’কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লুঠপাটের অভিযোগ করেন। ২০১৬-১৭অর্থ বছরে মানবিক সহায়তার জন্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্ধ ছাতকে ৩টি স্মারকে ২শ’ ৩২বান্ডিল ঢেউটিন ও তাদেরকে জনপ্রতি নগদ ৩হাজার টাকা করে দেয়ার নির্দেশ থাকলেও টাকা ছাড়াই উপকারভোগিদের মধ্যে শুধু ঢেউটিন বিতরণ করা হয়েছে। ছাতকে মোট বরাদ্ধ ৩শ’ ৫৯বান্ডিল টিনের মধ্যে ১শ’ ২৭বান্ডিলের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা। এতে ১শ’ ৩২বান্ডিল টিনের ৬লক্ষ ৯৬হাজারসহ ৩শ’ ৫৯বান্ডিলে মোট ১০লাখ ৭৭হাজার টাকা লুঠে নেয়া হয়। ২০১৭সালের ২৫সেপ্টেম্বর ১৩ব্যক্তির নামে স্থানীয় এমপির ডিও লেটারে ৩০বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ দেখানো হলেও মাস্টার রোলের তালিকা গায়েব করার অভিযোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। কিন্তু টিনের টাকা ইউএনও এবং পিআইওর স্বাক্ষরে পিআইও অফিসের সহায়ক দুলাল চন্দ্র রায়ের নামে উত্তোলন করা হয়। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন, ভিজিএফ, টেষ্ট লিরিফসহ প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে সোলার প্যানেল স্থাপনের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। কোন ব্যক্তি বা মালিকানাধিন সোলার প্যানেল স্থাপনের আইন না- থাকলেও নোয়ারাই ইউপির মানিকপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির নামে একাধিক প্রজেক্ট দেয়া হয়েছে। এদিকে সোলার প্যানেলের প্রায় ২২লাখ, মৎসও কৃষি ৩লাখ ৪৬হাজার ৫শ’, ঢেউটিনের ১০লাখ ৭৭হাজারসহ মোট ৩৬লক্ষ ২৩হাজার ৫শ’ টাকা লুঠে নেয়া হয়েছে। সুনামগঞ্জ ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্মারক নং ২৫২, তাং ২৩.১০.২০১৭ইং মূলে ছাতক অফিস সহায়ক রুবেল খানের নামে পত্র ইস্যু করে এসব টাকা লুঠে নেয়া হয়। এছাড়া ও অন্যান্য খাতে লুঠে নেয়া হয়েছে আরো কোটি কোটি টাকা। পিআইও শহিদুজ্জামান বলেন, ঢেউটিনের সাথে টাকা চেকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের উপরে তিনি মূখ খুলতে নারাজ। ইউএনও নাসির উল্লাহ খান মিটিংয়ে থাকার অজুহাতে পরে কল করার কথা বলে মোবাইল কেটে দেন তিনি।