ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ৬ দিনে ১৫টি প্রতিষ্ঠান ১ লাখ ৫১ হাজার টাকা জরিমানা
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রথমদিন ১ জানুয়ারি থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬ দিনে বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখ ৫১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এছাড়া শনিবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত এক অভিযানে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।বাণিজ্যমেলার ভেতরে অধিদফতরের অস্থায়ী কার্যালয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এ জরিমানা করেন বলে জানান সহকারী পরিচালক (গবেষণাগার) প্রণব কুমার প্রামাণিক।শনিবার (৬ জানুয়ারি) প্রণব কুমার বলেন, ১ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তবে শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।তিনি বলেন, আমাদের সহকারী পরিচালক পদবীর তিনজন কর্মকর্তা দুই শিফটে সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলায় দায়িত্বে থাকেন। পণ্য ক্রয় করে কোনো ক্রেতা যদি প্রতারিত হন তাহলে আমাদের দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে নির্ধারিত ফরমে অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়।যেসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে সেগুলো হলো- পণ্য বিক্রি করে অন্য প্রতিষ্ঠানের রশিদ দেয়ার অভিযোগে ড্রিম হাউস লেকভিউ রেস্টুরেন্টকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগকারীকে তাৎক্ষণিক ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার ৫০০ টাকা পুরস্কার দেয়া হয়।প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পণ্য না দেয়ার অভিযোগে শারমিন ইলেক্ট্রনিক্সকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করার অভিযোগে সাইদ এন্টারপ্রাইজকে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং মিথ্যা বিজ্ঞাপন থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করা হয়।পণ্যের মোড়কে খুচরা মূল্য লেখা না থাকায় প্রসাধন সামগ্রী বিক্রির প্রতিষ্ঠান ‘হোয়াইট হাউজ’ কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই অভিযোগে একটি মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য রাখায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পরিচালিত মালঞ্চ রেস্টুরেন্টকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মেহেদি হাসান প্রিন্স নামে একজনের অভিযোগের ভিত্তিতে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রির অভিযোগে ‘ক্যাফে সামস’ কর্তৃপক্ষকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগকারী ২৫ শতাংশ অর্থাৎ বাণিজ্যমেলায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অস্থায়ী অফিস পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার পান।মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের প্রতারিত করায় নোহা সার্ভিসিং কোম্পানিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিক্রির উদ্দেশ্যে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেয়ায় সমতা ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া মিথ্যা বিজ্ঞাপন দেয়ায় ‘নিউ ফ্যামিলি ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।পণ্যের গায়ে মূল্য লেখা না থাকায় এলকো লিমিটেডকে ২ হাজার টাকা, পাকিস্তানি প্যাভেলিয়নের ১২ নম্বর স্টলকে ৩ হাজার, কোরিয়ান কালেকশনকে ২ হাজার, ইরানি পণ্য সম্ভারকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া ২৩ টাকার কোল্ড ড্রিংকস ২৫ টাকায় বিক্রি করা ও ক্রেতার সঙ্গে অসদাচরণ করার কারণে আবুল হোটেলকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।অন্যদিকে, অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রির দায়ে বাণিজ্য মেলায় হাজীর বিরিয়ানিসহ চার রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন।মিথ্যা বিজ্ঞাপন, অতিরিক্ত মূল্য আদায়, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, সঠিক ওজন না দেয়া, ক্ষতিকর দ্রব্য মিশিয়ে পণ্য বিক্রয়, ভেজাল ও নকল পণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধে এই চার প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
হাজীর বিরিয়ানিসহ দিল্লী শর্মা অ্যান্ড বিরিয়ানি, আবুল হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট এবং ড্রাম হাইজ লেকভিউ রেস্টুরেন্টকে এই জরিমানা করা হয়।মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলায় এদিন প্রথম অভিযান চালানো হয় জানিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আজ মেলায় প্রথম অভিযান ছিল। চার প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জারিমানা করা হয়েছে। যতদিন মেলা চলবে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত থাকবে। এর পরে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’